আশাশুনি

জাতীয় সংসদের আয়োজনে আশাশুনিতে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে কর্মশালা

By daily satkhira

December 10, 2017

আশাশুনি ব্যুরো : সমাজের নিরব ঘাতক বাল্য বিবাহ। পরিবার, সমাজ তথা দেশের উন্নয়নে সবার আগে বাল্যবিবাহ নিরোধ করা জরুরি। এজন্য প্রয়োজন দেশের প্রতিটি গ্রামে-গ্রামে কমিটি গঠন করে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। একই সাথে নতুন প্রজন্মকে এ বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় আশাশুনি এতিম ছেলে মেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জাতীয় সংসদ ও ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় বাল্যবিবাহ নিরোধ কার্যক্রম তৃণমূল পর্যায়ে সম্পৃক্ততা ও দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তক্যে উপরোক্ত কথা গুলো বলেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রালয়ের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহল হক এমপি। বাংলাদেশ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব আইএম গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংসদ সচিবালয়ের এ্যাডভোকেসি অফিসার (এসপিসিপিডি প্রকল্প) খোন্দকার মো: নাজমুল হুদা শামীম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা: মো: তৌহিদুর ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সাবেক এমপি ডা: মোখলেছুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাকির হোসেন, সহকারি পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক। এছাড়া মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে সচেতনামূলক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করেন ডা. আরিফুজ্জামান। প্রধান অতিথি আরো বলেন, বর্তমান সরকার দেশনেত্রী শেখ হাসিনার সরকার নারী শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বাল্য বিবাহকে রোধ করে দেশের উন্নয়নে নারীদের অংশগ্রহণে দেশকে উন্নতশীল দেশে উন্নত করার স্বপ্ন দেখেন। এজন্য তিনি বাল্যবিবাহ নিরোধ কার্যক্রমে তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, উদ্বুদ্ধকরণ ও দক্ষতা উন্নয়নে নারীদের এগিয়ে আশার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব আইএম গোলাম কিবরিয়ার বলেন, বাল্য বিয়ে সমাজের নিরব ঘাতক, বাল্য বিয়ে দিলে গর্ভধারনে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যু উভয় সংকট দেখা দেয়, শিশু ও মা দু’জনেই পুষ্টিহীনতায় ভোগে। আর পুষ্টিহীন শিশু সমাজ ও দেশের জন্য ক্ষতি ও দেশের উন্নয়নের প্রতি বাঁধা। স্বাস্থ্যও উন্নতি, পরিবার, সমাজসহ দেশের উন্নয়নে সবার আগে বাল্যবিবাহ নিরোধ করা জরুরি। এজন্য দেশের প্রতিটি গ্রামে বাল্য বিবাহ নিরোধে নতুন প্রজন্মকে এ বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। জাতীসংঘ মনে করেছেন বাল্য বিবাহ রোধে জাতীয় সংসদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যে কারণে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপনাদের মনে হতে পারে দেশে এত জায়গা থাকতে কেন এখানে আমরা প্রোগ্রাম করলাম। সেটি শুধু মাত্র অধ্যাপক ডা: আ.ফ.ম রুহুল স্যারের অবদান। তার কারণে আজ আপনারা এধরনের কর্মশালায় অংশ নিতে পেরেছেন। আমাদের কাজ ওয়াজ নসিয়ত বা বক্তব্য দেওয়া নই। আমরা যে এই দেশকে পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পারি। তবে অনুষ্ঠানে আপনাদের উপস্থিতি দেখে আমরা এই ধারনা নিয়ে ঢাকায় ফিরে যেতে পারবো যে কিছু হলেও বাল্য বিবাহ বন্ধ এবং মাতৃমৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। কর্মশালায় মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বাল্য বিবাহ রোধে করণীয় বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাল্যবিবাহ রোধে করনীয় শীর্ষক এক রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিজয়ীদেরও মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুষমা সুলতানার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকবৃন্দ, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ, রেজিস্টারবৃন্দ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী ও সুধীবৃন্দ।