ফিচার

আজ সাতক্ষীরা আসছেন ওবায়দুল কাদের; জেলা আ ‘লীগের নেই কোন কার্যালয়

By Daily Satkhira

December 12, 2017

অপ্রতিম/এম বেলাল হোসাইন : আজ সাতক্ষীরায় আসছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। তার আগমনকে ঘিরে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠন সেজেছে নতুন সাজে। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সম্পাদকের সফরকে সফল করতে সকল প্রস্তুতিও কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে গত ২৪ নভেম্বর তার সাতক্ষীরা সফরের কথা থাকলে বিশেষ কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। তবে অবশেষে আজ সাতক্ষীরায় আসাছেন তিনি। তার সফরকে কেন্দ্র করে জেলায় আ ’লীগের নেতাকর্মীরা চাইছেন, জেলার সড়ক যোগাযোগের যে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে সেদিকে যেন মন্ত্রীর সুনজর পড়ে। সরকারের সড়ক যোগোযোগ ও সেতু মন্ত্রী হিসেবে এটি তার মন্ত্রণালয়েরই বিষয়। বর্তমান সরকারের অভাবনীয় উন্নয়ন কর্মকা-কে ম্লান করে দেয়া সাতক্ষীরার বেহাল সড়কগুলোতে ইতিমধ্যেই প্রলাপ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো। কিন্তু যথাযথভাবে সংস্কার করা না হলে স্বল্প সময়েই এসব রাস্তা আবারও ভগ্ন চেহারায় ফিরে যাবে বলে মনে করে সাধারণ মানুষ। এদিকে বিগত ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগ কার্যত দুটি ২টি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে কয়েকবার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগকে এক করার জন্য ঢাকায় ডেকে বসাবসী করলেও তেমন কোন সমাধান হয়নি। আর এ কারণে জেলা আওয়ামীলীগের কার্যক্রমে তেমন উদ্দীপনা লক্ষ্যণীয় নয়। এছাড়া জেলার শীর্ষ নেতাদের মধ্যে গ্রুপিং এর প্রভা তৃণমূলেও রয়েছে। অধিকাংশ উপজেলায় দলীয় কোন্দলের কারণে দীর্ঘদিন ধরে নেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ফলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে দলের চেয়ে বেশি ব্যক্তি বন্দনার রাজীনীতিই চলছে। এর পাশাপাশি ‘এমপি লীগ’তো আছেই। সম্প্রতি কলারোয়ায় উপজেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য মারপিটে রূপ নেয়Ñ যা সারাদেশে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করে। উল্লেখ্য বিগত কয়েকটি সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সাতক্ষীরা জেলা ৪টি সংসদীয় আসনে সম্মিলিতভাবে আওয়ামীলীগই সবচেয়ে বেশি সমর্থকের দল। কিন্তু প্রায় সকল আসনেই দলীয় কোন্দল থাকায় নির্বাচনে এক পক্ষ নমিনেশন না পেলে অপর পক্ষের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে যার ফলে দলীয় প্রার্থীর ভোটের বাক্সে দলের সকল ভোট পড়ে না। আর এ সুবিধা নিয়ে জেলায় মৌলবাদি রাজনীতিকে শক্তিশালী করে জামায়াত। সুতরাং সাতক্ষীরাকে মৌলবাদি রাজনীতির করাল থাবা থেকে বাাঁচাতে হলেও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আ’লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। নইলে ২০১৩ সালের জামাতি নৃশংসতার ইতিহাস আবারও ফিরে আসতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। অথচ স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরেও সাতক্ষীরায় জেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কোন কার্যালয় নেই। এতবড় একটি সংগঠনের দলীয় কার্যালয় না থাকায় দলীয় কার্যক্রম অনেকাংশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে দলের দায়িত্বশীল নেতা অভিযোগ করেছেন। কার্যালয় না থাকায় নেতাদের ড্রয়িং রুম কেন্দ্রিক রাজনীতি কোন্দল আরও বাড়িয়ে তুলছে। আর এই কোন্দল আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলেও প্রার্থীদের জন্য দুর্ভাবনার কারণ হতে পারে। তাই জেলার অধিকাংশ আ ’লীগ নেতাকর্মীর দাবি নিজস্ব কার্যালয়। এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আজকের সম্মেলন সফল করতে আমরা প্রস্তুত। ইতোমধ্যে আমরা সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। তবে অনাকাঙ্খিত বৃষ্টির কারণে আমাদের অনেক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। সম্মেলন স্থলের কাজও সম্পন্ন। বৃষ্টি যাতে সম্মেলনকে বাধাগ্রস্থ করতে না পারে এজন্যও বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও জেলা আওয়ামীলীগের কোন কার্যালয় হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু জায়গার অভাবে সেটি সম্ভব হয়নি। তবে কিছু আগে আমার নামে একটি জায়গা ভাড়া নিয়েছি। কিন্তু অর্থের অভাবে সেখানে কার্যালয় করা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে অবশ্য আমরা অর্থের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদনও করেছি। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, “আমরা আমাদের প্রিয় নেতা ও দলীয় সাধারণ সম্পাদক মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর কাছে আমাদের জেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর আশু সংস্কারের দাবি জনাবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক রেলালাইন স্থাপনের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন চাইব।” দলের অফিস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অবশ্যই দলীয় কার্যালয় আমাদের প্রয়োজন। আমরা একটি ভালো স্থান নির্বাচন করার চেষ্টা করছি। তা সম্ভব হলে অর্থ কোন সমস্যা নয়। আমরাও বিশ্বাস করি নিজস্ব কার্যালয় থাকলে সাতক্ষীরা আওয়ামীলী আরও গতিশীল হবে।” জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সাহিদ উদ্দীন বলেন, ২৫ বছর আগে পর পর দুইবার দলীয় সভানেত্রী বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জেলা আ ’লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে বলেছিলেন আপনারা জায়গা দেখেন আমি টাকা দেব। কিন্তু সুস্পষ্ট উদ্যোগ না নেওয়ার কারণে সেটি করা সম্ভব হয়নি।