ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানে বাবা-মায়ের কাছ থেকে ব্যাংকের লকারের চাবি ও ব্ল্যাঙ্ক চেকে সই না পেয়ে আক্রোশে বাবা ও মাকে লোহার রড দিয়ে পেটাল শিক্ষক ছেলে। গুণধর ছেলের এমন কর্মকাণ্ডে অবাক সাধারণ মানুষ।
বুধবার দুপুরে কাটোয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাধবীতলায় এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় তাপস মল্লিক (৭৬) নামের ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে স্থানীয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আটক করা হয়েছে অভিযুক্তকে।
পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্ত ছেলের নাম অমিত মল্লিক (৪৮)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অমিতের মা বুলুরাণিদেবীও।
স্থানীয়রা জানান, অমিত নামে ওই ব্যক্তি তার বাবা মাকে প্রায়শই মারধর করত। কাটোয়া শহরে মাধবীতলায় তাপসবাবুদের বাড়ির নিচেই হার্ডওয়ারের দোকান। পৈতৃক ব্যবসা।
জানা গেছে, অগাধ সম্পত্তির মালিক তাপস মল্লিকরা। তিনি বৃদ্ধ বয়সেও নিজেই দোকান চালান। দুজন কর্মচারী রয়েছেন দোকানে।
বুলুরাণি মল্লিক জানান, অমিত তাদের একমাত্র সন্তান। কেমিস্ট্রিতে এম এস সি। খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। অল্প বয়সেই শিক্ষকতার চাকরি পায়। বীরভূম জেলার কীর্নাহারের সরডাঙ্গা আব্দুল হালিম স্মৃতি শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষকতা করত। মাস চারেক আগে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অমিতের বিয়ে হয় মঙ্গলকোটের মাজিগ্রামে। একটি ছেলেও রয়েছে তার। তবে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির কারণে অমিতের স্ত্রী তিনমাস আগে ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছেন।
আহত তাপসবাবু বলেন, ‘আমার ছেলে প্রায়ই আমাকে চাপ দিত সমস্ত সম্পত্তি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য। মারধরও করত। তবে পারিবারিক বিষয় বলে মুখ বুজে সব সহ্য করে এসেছি। ’
তিনি জানান, এদিন বুধবার সকালে ঘটনার সূত্রপাত। তাপস মল্লিকের কথায়, ‘অমিত আমার কাছে ব্যাংকের লকারের চাবি চায়। আর চেকবই নিয়ে বলছিল একটি ব্ল্যাংক চেকে সই করে দিতে। আমি রাজি হইনি। তখন ও আমাকে দোকানের লোহার রড নিয়ে এসে মারতে থাকে। আমাকে ছাড়াতে এলে ওর মাকেও মারে। ’
পরে পুলিশ এসে তাপসবাবুকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে দুজনকে। দুজনেরই মাথায় আঘাত লেগেছে।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন