এম বেলাল হোসাইন : তালা উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার ২১ ডিসেম্বর’১৭ তারিখে ১৮৫৫৮ নং রিট পিটিশনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক শেখ হাসান আরিফ ও বিচারক বিশ্বদেব চক্রবর্তী এ স্থগিতাদেশ জারি করেন। রিটে বিবাদি করা হয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালা উপজেলা একাধিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, জনপ্রতিনিধি ও প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, তালা ইউএনও অফিসের দালাল হিসাবে পরিচিত পাওয়া এ শ্রেণির অসাংবাদিক নব্য সাংবাদিক নেতা, তালা ইউএনও নিজে বাদি হয়ে করা চাাঁদাবাজি মামলার এক আসামি, এক কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীসহ কয়েকজনের একটি চক্র এলাকার বহু প্রার্থীর নিকট থেকে নিয়োগ দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা আদায়ও করেছেন। উল্লেখ্য, তালা উপজেলার ৮৩টি স্কুলে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগের জন্য নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ০৫.৪৪.৮৭৯০.০০০.৩২.০১০.১৭-১৯২২ নং স্মারকে ৩০ নভেম্বর’১৭ তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার। বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার তারিখও নির্ধারণ করা হয়। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুযায়ী এসব নিয়োগের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সদস্য সচিব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং এমপি মনোনীত একজন ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনীত একজন ব্যক্তি। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে নিয়োগ কমিটির কোন বৈধ সভা অনুষ্ঠিত হয়নি যেখানে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনীত ব্যক্তিদ্বয় উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে এড়িয়ে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসার। নিয়োগ কমিটির অন্য সদস্যরা বলছেন, কোটি কোটি টাকা অর্থ বাণিজ্যের কারণে ইউএনও সাহেব আমাদেরকে না জানিয়ে গোপনে মিটিং করে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। এতে করে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে উক্ত নিয়োগ অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিটপিটিশন দায়ের করলে উক্ত বিজ্ঞপ্তির উপর আজ বৃহস্পতিবার স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এবিষয়ে জানতে চাইলে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই জানিয়ে বলেন, “৬ সদস্যের নিয়োগ কমিটির প্রত্যককে ৩বার করে মিটিং এর চিঠি দেয় হয়েছে। কিন্তু যারা বলছেন তারা ইচ্ছে করেই আসেননি।” অর্থ বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, “কমিটির প্রত্যেকের হাতে ২০ নম্বর সুতরাং আমার একার পক্ষে কাউকে অনিয়ম করে নিয়োগ দেয় সম্ভব নয়। আর আমার নাম করে কেউ অর্থ আদায় করলে তার দায় তো আমার নয়। আমি মনে করি যারা এসব বলছেন তারাই অর্থ বাণিজ্য করছেন।”