কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, কেউ নামমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। বিগত জাতীয় নির্বাচনে এমন সহজ জয়ের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের অনেকে নির্বাচনী এলাকায় যাতায়াত এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। কেউ কেউ এলাকার নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছেন—এমন অভিযোগও আছে। এভাবে গত চার বছরে অনেক এমপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব এমন স্থানে এসেছে, যা ঘোচানো সম্ভব নয়। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে অভিযুক্ত সংসদ সদস্যরা এলাকামুখী হতে গিয়ে স্থানীয়ভাবে বিরোধিতার মুখে পড়ছেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেক এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা চার বছরের অবহেলা আর উপেক্ষার জবাব দিচ্ছে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে। কোথাও এমপিদের এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হচ্ছে বা বিকল্প প্রার্থিতার কথা বলা হচ্ছে, কোথাও আবার সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কোনো কোনো এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য : আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘বেশ কিছু আসনে সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের অভিযোগ আমাদের নজরে এসেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করছেন। ’ তিনি এও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, এখানে প্রতিযোগিতা আছে, থাকবে। ’ আগামী নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দলের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে বিভিন্ন তথ্য আছে। আমরা সব আসনে জরিপও চালাচ্ছি। সব বিবেচনায় নিয়েই মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। ’
খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘গণতন্ত্রের মৌলিক চেতনা অনুযায়ী শত ফুল ফুটতে দেওয়া উচিত। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি সঠিক ফুলটিকে মনোনয়ন দিয়ে জনগণের মুখোমুখি করবেন। ’ তিনি বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য তাঁর এলাকার তালুকদার বা জমিদার নন। এটি কোনো স্থায়ী পদও নয়। একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য যদি পরেরবার আরো অধিক ভোটে জয়লাভ করতে না পারেন, তবে সেটি হবে তাঁর ব্যর্থতা, জনগণের নয়। ’
সূত্র: কালের কণ্ঠ।