মো. মফিজুর রহমান, বল্লী : সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাবে চাষ হচ্ছে শীতকালীন সবজি সিম। চলতি মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে সিম চাষ করা হয়েছে। উন্নত বীজ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। অন্যান্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন সিম চাষে বেশি ঝুঁকে পড়েছেন। মূলত শীত মৌসুমে সিমের চাষ বেশি হয়ে থাকে। শুধু শীত মৌসুমে নয়, বছরের অধিকাংশ সময়ই এখন সিমের চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। সরকারের কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ ও বিভিন্ন বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় সারা বছর ধরে চাষ হচ্ছে মুখোরোচক এ সবজি। চলতি মৌসুমে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জেলায় সিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিভিন্ন বাজারে ভাল দামে বিক্রি হচ্ছে। আর তাই চলতি মৌসুমে সিম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন এমনই একজন কৃষক সদর উপজেলার বিহারীনগর গ্রামের মো. আব্দুল বারিকের ছেলে কৃষক মো. মিজানুর রহমান। সিম চাষী মিজান জানান, বেসরকারি সংস্থা সিনজেনটা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি ৫কাটা জমিতে সিম চাষ শুরু করেন। তিনি বলেন, জমি চাষ, পরিচর্চা ও কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি লাভবান হয়েছেন। প্রতিমৌসুমে তার এই জমিতে খরচ হয় ২থেকে আড়াই হাজার টাকা। সেখানে তিনি সিম বিক্রি করেন প্রতি সপ্তাহে প্রায় আড়াই হাজার টাকা। খরচ বাদে তার প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হয়ে থাকে। তিনি জানান, সারা বছর বিভিন্ন সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কৃষি গবেষকরা জানান, শস্য ব্যবস্থাপনা ও শস্য বিন্যাস প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করার লক্ষ্যে তারা কৃষকদেরকে বছরের ১২ মাসই জমিতে ফসল ফলাতে উদ্বুদ্ধ করছেন। আর এরই অংশ হিসেবে তারা কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন সবজি চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। আধুনিক চাষ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা এখন বেশ লাভবান হচ্ছেন। ইউনিয়ন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কিরন্ময় সরকার জানান, চলতি মৌসুমে ঝাউডাঙ্গা ও বল্লী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে আবাদী জমিতে, ঘের ভেড়ি, ও বসত বাড়ির আঙিনায় মাঁচা পদ্ধতি সিম চাষ করা হচ্ছে। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় প্রান্তিক চাষীরা এখন সিম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ফলনও আগের চেয়ে তুলনামূলক বেশি হওয়ায় চাষীদের সিম চাষে আগ্রহ বেশি। সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা পেলে বিভিন্ন মৌসুমি সবজী চাষ আরো ব্যাপকতা লাভ করবে বলে জানান প্রান্তিক চাষীরা।