কেএম রেজাউল করিম/আরাফাত হোসেন লিটন: দুর্বিত্তদের গুলিতে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতন (৪৫) গুরুত্বর আহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামীলীগ। বুধবার বিকাল ৩টায় সখিপুর মোড় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নওয়াপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুজিবর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির সঞ্চলনায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মুনসুর আহম্মেদ। বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল গণি, যুগ্ন-সম্পাদক আনোয়ারুল হক, নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন সাহেব আলী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্নুর, সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার ঘোষ, শ্রমিকলীগের সভাপতি আবু তাহের, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি আবু রায়হান তিতু, ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান সবুজ প্রমূখ। বক্তরা বলেন, আপনারা অনেকে মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি অনেকে দেখেননি। সেটি ২০১৩ সালে জামায়াত-বিএনপি নতুন করে দেখিয়েছে। তারা মানুষ খুন করে দেখিয়েছে মানুষ কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে। তাদের দমন করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অতিদ্রুত অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে, না হলে আওয়ামীলীগ তার দাতভাঙ্গা জবাব দেবে। প্রয়োজন হলে আইন হাতে তোলা হবে। আরো বলেন, ফারুক হোসেন রতন আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়লাভ করায় কুচক্রিরা এটি মেনে নিতে পারেনি। তারা সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ এবং নেতাকর্মীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে যে চক্রন্তে লিপ্ত হয়েছেন। শেখ ফারুক হোসেনের উপর যারা হামলা চালিয়েছেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধী যেই হোক তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে। বক্তরা ২০১৩ সালের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, জামায়াত-বিএনপি মিলে সেই সময়ে যারা দেবহাটায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে ছিলেন তারা পুনরায় আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। তাদের সেই কু-মতলব আর কখনো বাস্তাবায়ন করতে দেওয়া হবে না। তাছাড়া বিএনপি-জামাত যেখানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করবে সেখানেই তাদের প্রতিহত করা হবে। হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, ২০১৩ আর ১৮ এক মনে করলে হবে না। আজকে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার দেশ তাই সরকারের উন্নয়নে বাধাগ্রস্থ করতে আসলে তা কঠোর ভাবে দমন করা হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সু-সংগঠিত তাই কোন নেতাকর্মীর একফোটা রক্ত বিফলে যেতে দেওয়া হবে না। জামাতায়-বিএনপিকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। আগামি নির্বাচনে আবারো আওয়ামীলীগকে নির্বাচিত করে শেখ হাসিনরা স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করতে হবে। বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পেীর আওয়মীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাদাৎ হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরশাদ আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দীন খোকন, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, তাঁতিলীগের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম হাফিজসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের উপজেলা ও ইউনিয়নের নের্তৃবৃন্দরাসহ সর্বস্থরের জনসাধারণ। প্রসঙ্গত, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতন মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মটরসাইকেল যোগে পারুলিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে হতে কয়েকগজ দুরে সখিপুর রাজারবাড়ি মোড় এলাকায় পৌঁছালে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে গতিরোধ করে পরপর ৩টি গুলি ছোড়ে। এতে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতনের বুকের ডানপাশে পাজড়ের নিচে গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরদিন বুধবার শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয় তাকে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে সখিপুর কলেজ মাঠের পাশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাও. দেলোয়ার হুসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জামাত-শিবির কর্তৃক ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন রতনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর হামলা চালিয়ে মারাত্বকভাবে জখম করে। একপর্যয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। আবারো তার উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় উপজেলার সর্বস্থরের মানুষ তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। এদিকে, গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতনের উপর হামলার ঘটনায় সখিপুর, পারুলিয়া এলাকার সকল দোকানপাট দুপুর ২-৬টা পর্যন্ত বন্ধ রেখে শোক পালন করে দোকানদারা।