তোষিকে কাইফু: সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এস. এম জগলুল হায়দার তার নির্বাচনী এলাকায় নদীভাঙনে শ্রমিকদের সাথে মাটি কেটে বাঁধ বাঁধার পরবর্তী শ্রামিকদের সাথে একই সারিতে বসে খাবার খাওয়াসহ নানাভাবে আলোচিত হয়েছেন। অবহেলিত সাতক্ষীরার সুন্দরবনের কোল ঘেষে যাওয়া উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র সংবাদের শিরোনামে নিয়ে আসা সেই জগলুল হায়দার এমপির সাথে একান্ত সাক্ষাৎকালে তিনি বলেন, “আমি আবারও নির্বাচিত হলে এলাকার অসমাপ্ত উন্নয়নসহ জনগণের সেবা প্রদানে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবো।” তিনি সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন সাতক্ষীরার সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল ডেইলি সাতক্ষীরা’র সাথে। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার নির্বাচনী এলাকার ৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে দিয়েছেন। এছাড়াও আমার উপকূলীয় এলাকায় স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, কালভার্টসহ সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।” তিনি বলেন, “আমার সময়কালে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার নির্বাচনী এলাকা অবহেলিত শ্যামনগর উপজেলায় যে উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়েছেন বিগত সরকারের আমলে এমন উন্নয়নের ছোঁয়ার একটি অংশও এই শ্যামনগরে পড়েনি। শিক্ষা ক্ষেত্রে যে সফলতা, বিশেষ করে অবকাঠমগত উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে এ সময়ে।” বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বর্তমান জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, কৃষি, তথ্যসহ সার্বিক বিষয়ে উন্নয়ন করে যাচ্ছে। ইংরেজি বছরের প্রথম দিন সারাদেশে একযোগে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে কোটি কোটি বই বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। যাতে তারা নব উদ্যমে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে। এজন্য ইংরেজি বছরের ১ম দিনটি এখন বিনামূল্যে বই বিতরণ উৎসব হিসেবে পালিত হচ্ছে। বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ৩৬ কোটি বই বিতরণ একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এটা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষেই শুধু সম্ভব। আগামীতে শেখ হাসিনা আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে শুধু বই নয়, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে মিড ডে মিল ব্যবস্থা চালু করা হবে।” বিগত ২০০৭ সালে সিডর এবং ২০০৯ সালে ঘুর্ণিঝড় আইলা হওয়ার পর বাংলাদেশের মধ্যে উপকূলীয় এলাকা শ্যামনগর সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। তখনকার সময়ে কিভাবে তিনি এসব এলাকার মানুষের পাশে থেকে তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেনÑ সেকথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “২০০৭ সালে সিডর এবং ২০০৯ সালে ঘুর্ণিঝড় আইলা হওয়ার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা শ্যামনগরে এসে মানুষের সমস্যাটা দেখার পর যাতে আমরা এই ক্ষয়-ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে পারি সে জন্য তিনি ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ করেছেন। এবং আমরা এই কয় বছর জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশানুযায়ী কাজ করে সেই ক্ষতিগুলো পূরণ করতে পেরেছি বলে আমি মনে করি।” বর্তমান সরকারের আমলে শ্যামনগর এলাকায় মোট কত কিলোমিটার রাস্থার নির্মাণ কাজ করা হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বঙ্গকন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পরে শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় শতাধিক কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং করা কয়েছে। এর ভিতরে নাওয়াবেকি এবং কাশিমাড়ির রাস্তা উল্লেখযোগ্য। এসময় তিনি বলেন শ্যামনগর ও কালিগঞ্জের একাংশ মিলে সর্বমোট অর্ধশত সাইক্লোন সেন্টার নির্মিত হয়েছে। শ্যামনগরের প্রত্যন্ত অঞ্চল গাবুরা ও পাতাখালির যোগাযোগ মাধ্যম দূর্গম হওয়ায় ঐসব এলাকার মানুষদের নিয়ে কি ভাবনা আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “শ্যামনগরের উপকূলীয় এলাকা গাবুরা ও পাতাখালির যোগাযোগ মাধ্যম খুবই দূর্গম। এই এলাকার চারপাশ দিয়ে নদী বয়ে চলেছে। তাই উপকূলীয় অঞ্চল হিসেবে এসব এলাকার উন্নয়নের কাজে আমরা গুরুত্ব দিয়ে থাকি।” সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সাধারণ মানুষের পাশে সময় কাটানো সময় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমি গরীব ও অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ঝড়, বরষাসহ সকল আঘাত উপেক্ষা করে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। আমার নির্বাচনী এলাকাটি আসলে আইলা দুর্গত, সুন্দরবনের পাশ ঘেরা, বঙ্গোপাসাগরের পাশে অবস্থিত। বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন হয়। যখনই সেখানে ভাঙন দেখা দেয়, তখনই সেখানে আমি ছুটে যাই। শ্রমিকদের সঙ্গে লুঙ্গি পরে কাজ করি। এতে করে শ্রমিকরা তাদের কাজে আরও উদ্বুদ্ধ হয়, আবারও তাদের কাজেও আগ্রহ বাড়ে। পরিশেষে, তিনি যদি আবারও ক্ষমতায় আসতে পারেন তাহলে শ্যামনগরবাসীর জন্য কি করতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমার নির্বাচনী এলাকা সাতক্ষীরা-৪ আসনের শ্যামনগর ও কালিগঞ্জের আংশিক এলাকার মানুষের কাছে আমার দাবি যদি আগামীতে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দেন এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারিÑ আমি ইতিপূর্বে যে কাজগুলো করেছি আর যে কাজগুলো এখনো অসমাপ্ত আছে সে কাজগুলো আমি সমাপ্ত করবো। এবং সবসময় আমি গরীব-দুঃখি মানুষের পাশে থেকে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে থাকতে চাই। সর্বশেষে তিনি যাতে একাদশ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে জনগনের তথা এলাকার উন্নয়নে সচেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারেন এ ব্যপারে সকলের কাছে দোয়া চান ও সহযোগিতা কমনা করেন।