খেলা

জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে বড় জয় বাংলাদেশের

By Daily Satkhira

January 23, 2018

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশই ছিল পরিস্কার ফেভারিট। সেই তকমার যথার্থতাও দারুণভাবে প্রমাণ করলেন মাশরাফি-সাকিব-তামিমরা। জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিল টাইগাররা।

সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে বাংলাদেশের দেওয়া ২১৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে জিম্বাবুয়ে। টস জিতে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ হয় ২১৬ রান। জিম্বাবুয়েকে জিততে টার্গেট ছিল ২১৭ রানের।

২১৭ রান টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে ঠিক সামলে উঠতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ব্যাটিং বিপর্যয়ে টাইগারদের কাছে হারতে হয় ৯১ রানের ব্যবধানে।

ব্যাট করেতে নেমে শুরটা ভালো করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলে অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শট খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দিয়েছেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। আউট হওয়ার আগে করে ৫ রান। মাশরাফির পরেই জিম্বাবুয়ে শিবিরে জোড়া আঘাত হানে সাকিব আল হাসন। সলোমন মিরেকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরায় সাকিব এর পরের বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পরে ব্রেন্ডন টেইলর আউট হওয়ার আগে করে ০ রান।

এরপর দলীয় ৩৪ রানে অফ স্টাম্পে মাশরাফির গুড লেংথ বল। খোঁচা মারতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন ক্রেইগ আরভিন। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন সাব্বির রহমান। সিরিজে আরো একবার বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ আরভিন। ফেরার আগে করে ১১ রান। তারপর ক্রিজে নেমে জিম্বাবুয়ের রানের চাকা সচল করে সিকান্দার রাজা ও পিটার মুর তবে তাদের ইনিংস বড় করতে দেয়নি সানজামুল ইসলাম। তার বোল খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পরে পিটার মুর। আউট হওয়ার আগে করে ৪২ বলে ১৪ রান। পরের বলে আবার সেই সানজামুলের বোলং ঘুর্নিতে আউট হয় ম্যালকম ওয়ালার(০)। সবাই যখন ব্যাট হাতে ব্যার্থ তখন একাই লড়েছে সিকান্দার রাজা। তবে রাজা কে মোস্তাফিজ বোল্ড করলে হার নিশ্চিত হয় যায় জিম্বাবুয়ের। সিকান্দার রাজা ৫৯ বলে ৩৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যায়। এরআগে আউট হয় গ্রায়েম ক্রেমার তিনি করেন ৩১ বলে ২৩ রান। তারপর আর কেউই উইকেটে ধারাতে পারেনি ।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরটা ভালো হয়নি টাইগারদের ব্যাসম্যানদের। আগের দুই ম্যাচে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা এনামুল হক বিজয় আজ শুরুতেই আউট হয়। জিম্বাবুইয়ান পেসার কাইল জার্ভিসের বলে এলবিডব্লিউ হওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান করেছেন ১ রান। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ১ উইকেটে ২ রান।

তামিম ইকবালের সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে যোগ দেন সাকিব আল হাসান। মাঠে নেমে দেখে শুনে খেলতে থাকেন সাকিব ও তামিম। জিম্বাবুইয়ান স্পিনারের পরের ওভারের প্রথম বলে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়েছে সাকিব আল হাসান। তবে আউট হওয়ার আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পায় সাকিব। তার ব্যাট থেকে আছে ৫১ রান।

তারপর তামিম-সাকিবের শতরানের জুটি ভাঙার পর তামিম-মুশফিকের ব্যাটে ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ৩৫ রানের এ জুটি ভাঙার পরই হঠাৎ এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। ২ উইকেটে ১৪৭ থেকে দ্রুতই স্কোর দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১৭০, ২৩ রানেই চলে যায় ৬ উইকেট!

এরপর উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না মুশফিকুর রহিম। স্পিনার গ্রায়েম ক্রেমারের বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টপ এজ হয়ে বল উঠে যায় ওপরে, শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ নেন ব্লেসিং মুজারাবানি। ২৫ বলে এক ছক্কায় মুশফিক করেন ১৮ রান। পাঁচ নম্বরে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহও। গ্রায়েম ক্রেমারের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে তিনি ৭ বলে করেছেন ২ রান। সাবাই যখন সাজঘরে আসা যাওয়ার ব্যাস্ত তখন দলকে একাই এগিয়ে নিচ্ছেলেন তামিম ইকবাল। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে দল জিতে যাওয়ায় ৮৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিক ৮৪ রানেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন। আজ টানা তৃতীয় ম্যাচে পঞ্চাশ পার করলেন। কিন্তু সেটিকে সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করতে পারলেন না তিনি। ৭৬ রান করে স্টাম্পড হয়ে গেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর নাসির (২),সাব্বির(৬) ও মাশরাফি(০) কেউই ইনিংস বড় করতে পারেনি। তারপর শেসের দিকে এসে সানজামুল ইসলামের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ১৯ রান আর সেই রানের জন্য দলীয় ২০০ রানের কাছাকাছি যায় বাংলাদেশ। এরপর মোস্তাফিজের অপরাজিত ২১ বলে ১৪ ও রুবেল হোসেনের ৪ বলে ৮ রানে বাংলাদেশের সংগ্রহ দারায় ২১৬।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: জিম্বাবুয়ে: ১২৫/১০ (৩৬.৩) টার্গেট: ২১৭ আউট: হ্যামিল্টন মাসাকাদজ,সলোমন মিরে, ব্রেন্ডন টেইলর, ক্রেইগ আরভিন,ম্যালকম ওয়ালার, পিটার মুর। বাংলাদেশ: ২১৬/৯ (৫০ওভার )

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান,মুশফিকুর রহিম , মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, সানজামুল ইসলাম।

জিম্বাবুয়ে একাদশ: হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, সলোমন মিরে, ক্রেইগ এর্ভিন, ব্রেন্ডন টেইলর (ডব্লু), সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, ম্যালকম ওয়ালার, গ্রায়েম ক্রেমার,কাইল জার্ভিস, তেন্ডাই চাতারা, ব্লেসিং মুজারবাণী