আশাশুনি

আশাশুনিতে চাকরির নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র

By Daily Satkhira

February 01, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার আশাশুনিতে চাকুরি দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন একটি প্রতারক চক্র। ঘটনাটি ঘটেছে আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামে। বড়দল গ্রামের বনদস্যু নজরুল গাজী ও ফরিদ মোল্যাসহ এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন দফতরে আবেদনও জানানো হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের সহকারী ইন্সট্রাক্টর ইয়াছিন আলী জানান, আমার ছোট ভাই আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের আঃ আজিজকে (ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি) একই গ্রামে মৃত মুনসুর গাজীর ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী (৪৮) সিংগাপুর পাঠানোর নাম করে গত বছরের ১৯ জুন তিন শত টাকার ষ্ট্রাম্পে লেখা পড়া করে ১০ (দশ) লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু অদ্যাবধি আমার ছোট ভাইকে বিদেশ না পাঠিয়ে এবং গ্রহণকৃত ১০ (দশ) লক্ষ টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহনা করিতে থাকেন। ইতিমধ্যে আমরা এলাকা বাসীর মাধ্যমে জানতে পারি যে এই নজরুল গাজী একজন বনদস্যু, সন্ত্রাসী ও একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের শীর্ষ স্থানীয় নেতা। এই চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য ফরিদ মোল্যা(৩৮), নিহার রঞ্জন মন্ডল, মন্টু সরদারসহ ৭/৮ জন। এই চক্রের সদস্যরা সন্ত্রাসী ও বেআইনী কার্যাকলাপের সাথে জড়িত। সন্ত্রাসী এই চক্রটি আমাদের নানাবিধ ক্ষয়-ক্ষতিসহ গুম ও হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। তিনি জানান, এই চক্রটি বর্তমানে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে খুলনার নিরালায় অবস্থান করছেন। এরা দেশের বিভিন্ন এলাকার সরলমনা মানুষকে চাকুরি দেওয়াসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেওয়া, বিদেশ পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করে চলেছেন। এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন এলাকার বেকার মানুষের নিকট গিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা, সচিব, ডিআইজি, ডিসি, এসপি সাজিয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলান। এর ফলে বেকার ও সরলমনা মানুষের মধ্যে আস্থা গড়ে ওঠে। এভাবে প্রার্থীদের ঢাকা, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে গিয়ে তাদেরই সাজানো ভুয়া অফিসে নিয়ে মৌখিক পরিক্ষাও নেন। পরবর্তীতে প্রার্থীর মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠান যে, আপনি মৌখিক পরীক্ষায় টিকে আছেন। এরপর প্রতারক চক্রটি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের নকল সীল ও কর্মকর্তার স্বাক্ষর স্ক্যান করে জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে বিভিন্ন প্রার্থীর নিকট পাঠান বলে এলাকায় বহুল প্রচারিত রয়েছে এবং তথ্য প্রমাণও রয়েছে। নিয়োগপত্র পৌঁছানো মাত্রই তারা প্রার্থীদের নিকট যেয়ে চুক্তির সমুদয় টাকা আদায় করেন। এ ঘটনায় এই চক্রের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলাও দায়ের হয়েছে। তাদের দ্বারা খুলনার আনোয়ার হোসেন, আশাশুনির প্রতাপনগরের গোলাম উল্লাহ, বড়দলের মিন্টু সরদার, বাগেরহাটের কাটাখালির নুর মোহাম্মদ, মোল্লার হাটের মনির, পাবনার আব্দুল মান্নান, কয়রার আছাদুলসহ বহু লোক ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছেন। তিনি আরো জানান এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ইতিমধ্যে সংবাদ সম্মেলনসহ পুলিশ, র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার দফতরে আবেদন জানানো হয়েছে।