নিজস্ব প্রতিবেদক: রাণী সরকার, সাতক্ষীরার এক কৃুত সন্তান, চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন ১৯৫৮ সাল থেকে। এরই মধ্যে তিনি এক হাজারের ও বেশি ছবিতে কাজ করেছেন। কিন্তু বর্তমানে কোনো কাজের ডাক পাচ্ছেন না তিনি। বলতে গেলে অর্থকষ্ট ও অর্ধাহারেই দিন কাটছে তাঁর। রাণী সরকার বলেন, ‘এভাবে ভাতের অভাবে কাঁদতে হবে ভাবিনি। দিনটা শুরু হয় ভাতের অভাব দিয়ে। চাল থাকে তো নুন থাকে না অবস্থা। এভাবে জীবনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাকি দিনগুলো কীভাবে কাটবে বুঝতে পারছি না। কারো বাসায় গেলে চা বিস্কুট খাওয়ায়, কিন্তু ভাত দেয় না কেউ। আমি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি, সবাই আমাকে চেনে, যে কারণে ভিক্ষা করার কথা চিন্তাও করতে পারি না।’ সংসারে কে কে আছেন, কীভাবে চলে সংসার জানতে চাইলে রাণী সরকার বলেন, ‘আমরা তিন ভাইবোন ছিলাম, বড় ভাই মারা গেছেন। ছোট ভাই পঙ্গু, এখনো প্রতি সপ্তাহে চিকিৎসা করাতে হয়। তার বউ-বাচ্চাসহ মোট ছয়জনের সংসার। ছোট ভাই কোনো কাজ করতে পারে না। আমার সংসার চলে প্রধানমন্ত্রীর টাকায়। তিনি আমাকে ২০ লাখ টাকার একটা চেক দিয়েছিলেন, সেখানে থেকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা পাই। আমরা যে বাড়িতে থাকি, ছোট দুই রুমের একটা বাসা, তাও সব মিলিয়ে ১৩-১৪ হাজার টাকা চলে যায়। বাকি ছয়-সাত হাজার টাকা দিয়ে কোনো ভাবে চাল ডাল কিনি, কিন্তু তা দিয়ে চলা সম্ভব নয়, যে কারণে আমার সংসার আর চলে না।’ কাজ করতে চান জানিয়ে রাণী সরকার বলেন, ‘আমি কারো কাছে ভিক্ষা চাইছি না, আমি কাজ করে ভাত খেতে চাই। আমাকে আপনারা কাজ দেন, কাজের বিনিময়ে যত ইচ্ছে টাকা দেন। আপনাদের শুটিংয়ে গেলে অন্তত সেই সময়টা ভালো খেতে পারব, কিছু টাকা পেলে বাড়িতেও দুদিন খাবার হবে।’ চার দশকের মতো কাজ করলেও কেন কোনো সঞ্চয় করেননি জানতে চাইলে রাণী সরকার বলেন, ‘আমরা কি আর টাকার জন্য কাজ করেছি? নেশা থেকেই কাজ করতাম। যেদিন শুটিং থাকত না, সেদিনও এফডিসিতে গিয়ে আড্ডা দিয়ে আসতাম। তা ছাড়া একজন সহশিল্পী কত টাকা পায়? টাকা তো পায় হিরো হিরোইনরা। তাঁরা দুই লাখ টাকা পেলে আমরা পেতাম দুই হাজার, ছবির পরিচালকও ঠিক মতো টাকা পায় না। শুধু আমাদের সময়ই না, এখন যারা সহশিল্পী হিসেবে কাজ করছে তাদের কতজন স্বচ্ছল? এটা আসলে বলে লাভ নেই। টাকা যা পেয়েছি, তখন পোলাও কোরমা খেয়েছি, কিন্তু জমানোর মতো টাকা কখনোই পাইনি।’