শ্যামনগর

নতুন সবুজে এক অন্যরকম শ্যামনগরের গাবুরা

By Daily Satkhira

February 04, 2018

শ্যামনগর ব্যুরো: সবুজের জন্য নানারকম কর্মসূচি চলছে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ খ্যাত গাবুরা ইউনিয়ন। ভয়ংকর আইলার ছোবলে সবুজ নামক দৃশ্যটি হারিয়ে ফেলেছিল গাবুরার মানুষ। চারিদিকে ছিলো ধু-ধু মরুভূমি।এ থেকে মুক্তি পেতে প্রতিবছর দেশের প্রতিটি উপজেলার বৃক্ষ মেলার আয়োজন হলেও গাবুরা ইউনিয়নে বৃক্ষমেলা থেকে বৃক্ষ ক্রয় করে মানুষ গাছ লাগাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। মানুষ গাছের প্রতি এখন অনেক আন্তরিক। সাধুবাদ জানাই এখানকার স্থানীয় মানুষকে। বিশ্বের আবহাওয়াবিদদের মতে, গত আইলার করাল ছোবল থেকে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট অনেকটা রক্ষা করেছে। ফলে দেশের উপকূলীয় এলাকার ক্ষতি কিছুটা কম হলেও মানুষ সহ জীব বৈচিত্র্য হারা হয়েছিলো গাবুরা। যদি এই অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট না থাকত তাহলে আইলা ও সিডরে যে ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে আরো ২০ গুণ বেশি ক্ষতি হতো। গাছ আমাদের বিপদের বন্ধু, গাছ বিহীন স্বাভাবিক জীবন বিপন্ন। জীবনে-মরণে গাছের প্রয়োজন। ফুল, ফল, কাঠ, জ্বালানি, ছায়া আমরা গাছ হতে পেয়ে থাকি। গাছ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়তা করে। ভারসাম্য বজায় রাখে। আবহমান বাংলার চিরচেনা শস্য-শ্যামল সবুজে ঘেরা ছায়া পথ ছিলো। গত কয়েক দিন আগে গাবুরায় পা দেখে এখানে নতুনভাবে জন্মানো গাছগুলো দেখে মনটা শান্তিতে ভরে উঠল। গাছগুলোতে একটু আলতো ছোঁয়া দেয়ার চেষ্টা করলাম। শরীর আনন্দে নেচে উঠল। অনেক সময় ধরে সবুজের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। মনে হলো- চোখের পাওয়ার খানিকটা বেড়ে গিয়েছে। গাছ-গাছালি পাখ-পাখালির দেশ বাংলাদেশ। গাছ লাগানো এখন অনেক মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।নদী ভাঙন রোধে এখানে রাস্তার ধার বাঁধের পাশে গাছ লাগানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক বাড়ির মালিক তার বাস্তু ভিটার ওপর শাক-সবজি, ফুল-ফল ছাড়াও দেশি-বিদেশি গাছের বাগান গড়ে তুলেছেন। এটা সত্যি আনন্দের বিষয়। দ্বীপ খ্যাত গাবুরায় বৃক্ষরোপণ অনেক বেড়েছে। এতে করে বেড়েছে সবুজায়নের মাত্রাও। যার ফলে তাপমাত্রা হ্রাস ও পরিবেশ রক্ষায় অনেক সহায়ক হচ্ছে। আমরা সকলেই সে জন্য এই সুন্দর কাজের সুদূরপ্রসারী অগ্রযাত্রায় আশাবাদী। সারাদেশের ন্যায় প্রতি বছর এখানে এখন বৃক্ষমেলা হয়। বৃক্ষমেলার মাধ্যমে বৃক্ষরোপন রোপন অনেকাংশে বেড়ে বলে এখানকার স্থানীয়দের কাছঠ থেকে জানা যায়। এখানকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছোট ছেলেমেয়েরাও গাছ কিনে রোপণ করে তাদের অভ্যাসকে প্রতিষ্ঠিত করছে। নিঃসন্দেহে এটা শুভ উদ্যোগ। এখানকার স্থানীয় মুরব্বিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, মানুষ বেইমানি করলেও গাছ কখনো মানুষের সঙ্গে বেইমানি করে না। সে প্রতিনিয়ত আমাদের সেবা দিয়েই যায়। বাতাস, ফুল, ফল ইত্যাদি আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। পরিশেষে আনাচে কানাচে সবুজে ভরে উঠুক। সবুজ বেষ্টনিতে পরিণত হোক গাবুরা ইউনিয়ন এই কামনা করি।