ফিচার

প্রশ্ন ফাঁসের ‘মহামারি’ সঙ্গে ফের নকলবাজি

By Daily Satkhira

February 11, 2018

অনলাইন ডেস্ক: এসএসসির গণিতের প্রশ্নও সোশ্যাল নেটওয়ার্কে পাওয়া গেল পরীক্ষা শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা আগে। এর মধ্যে ‘এমসিকিউ’ অংশের সঙ্গে মূল প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গতকাল শনিবার বিভিন্ন জেলায় গ্রেপ্তার হয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে অনেকের স্মার্টফোন। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিনব ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে। গণিতের প্যাকেটে অন্য প্রশ্ন আসায় আরেক কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন এনে ফটোকপি করে পরীক্ষা নিতে হয়েছে।

শেরপুর মডেল গার্লস ইনস্টিটিউট কেন্দ্র থেকে এসএসসির প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্মার্টফোন থেকে বিভিন্নজনকে ‘গণিত’ প্রশ্ন সরবরাহ করার সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার অ্যানড্রয়েড স্মার্ট মোবাইল ফোনটিও জব্দ করা হয়।

শেরপুর সদর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের মডেল গার্লস ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের সামনে টহল পুলিশের একটি দল দায়িত্বরত ছিল। এক যুবকের গতিবিধি সন্দেহজনক হলে কনস্টেবল গোলাম মোস্তফা তার স্মার্টফোনটি জব্দ করেন। এরপর যুবকটিকে কেন্দ্রে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হানুল ইসলামের কাছে সোপর্দ করা হয়। তার ফোনসেট পরীক্ষা করে গণিতের বহু নির্বাচনী পরীক্ষার ৩০টি প্রশ্ন ও উত্তর পাওয়া যায়। কেন্দ্রে অবস্থানরত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদ এ জেড মোরশেদ আলীর প্রশ্নের মুখে যুবকটি বলেন, তার নাম মো. সেলায়মান হোসেন (২৫)। বাবা সদর উপজেলার লছমনপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম খোকা মিয়া। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের জানান, অনুষ্ঠিত গণিত পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া গেছে। শেরপুর সদর থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আটক সোলয়মানের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। তার সঙ্গে জড়িত অন্যদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। রাজশাহীতে রাজশাহী সিটি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রাবিয়া ইসলাম রিম (২২) সকাল ১০টার দিকে জেলার পিএন গার্লস স্কুল কেন্দ্রের পাশে বসে মোবাইল ফোনে এসএসসির গণিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে সেগুলোর উত্তর কাগজে লিখে দিচ্ছিল। অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে চাইলে সে কৌশলে সরে পড়ার চেষ্টা করে। তখন ছাত্রীটিকে আটক করে পুলিশের কাছ সোপর্দ করে তারা। বোয়ালিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ কালের কণ্ঠকে জানান, পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোনে মেসেঞ্জার ইনবক্সে পাওয়া ৩০টি অবকেজটিভ প্রশ্ন হুবহু মিলি গেছে। ফলে ওই ছাত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পাবলিক পরীক্ষা আইনে ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে বিকেলেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হস্তক্ষেপে জব্দ হলো প্রশ্নপত্র ফাঁসে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনসেট। এ ঘটনায় এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেরিনা সুলতানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তিনি কেন্দ্রসচিবদের কাছে গণিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে নিজ অফিসের দিকে ফিরছিলেন। বাগাতিপাড়া পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দুই-তিনটি জায়গায় জটলা দেখতে পেয়ে তিনি গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। একটি জটলার কাছে গিয়ে দেখেন, সবাই মোবাইল ফোনে কিছু একটা দেখছে। তিনি ঘটনা জানতে চাইলে সবাই পালিয়ে যায়। এ সময় ফেলে যাওয়া একটি মোবাইল ফোনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গণিতের প্রশ্নপত্র দেখতে পান এবং পরে দেখা যায় কেন্দ্রে সরবরাহ করা প্রশ্নপত্রের সঙ্গে এটি হুবহু মিলে গেছে। ফোনটি পরীক্ষার্থী শাহরিয়ার হোসেন শুভর বলে নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে বহিষ্কার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পরিত্যক্ত আরো একটি স্মার্টফোন পাওয়া গেলেও তাৎক্ষণিক এর মালিককে শনাক্ত করা যায়নি। শুভ উপজেলার দয়ারামপুর এলাকার কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের ছাত্র। ফোনটি তার বাবার কাছে ছিল বলে জানা যায়। পরীক্ষার্থী শুভর বাবা সাবেক সেনা সদস্য রহমত আলী এবং শুভর ফুফাতো ভাই মাগুরা পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র ও সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার বাগমারা এলাকার শাকিল হোসেনকে অভিযুক্ত করে বাগাতিপাড়া থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। বাগাতিপাড়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকে অভিযান চালানো হচ্ছে। গাজীপুরের কালীগঞ্জে দায়িত্ব অবহেলার জন্য দুই শিক্ষককে আটক এবং ছয় পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহাগ হোসেন জানান, পরীক্ষার্থী প্রণয় দাসের মোবাইলে ‘প্রশ্ন ধারা ৫৩’, ‘এসএসসি এক্সাম ২০১৮ (গণিত)’সহ পাঁচটি মেসেঞ্জার গ্রুপ পাওয়া যায়। মেসেঞ্জার ঘেঁটে দেখা গেছে ‘প্রশ্ন ধারা ৫৩’ থেকে সকাল ৯টায় প্রশ্ন ও সাড়ে ৯টায় ৩০টি এমসিকিউর উত্তর পেয়েছে। এসব প্রশ্ন ও উত্তরগুলো সে ওই দুই ছাত্রকে দিয়েছিল। অন্য ছয় পরীক্ষার্থী উত্তরগুলো মোবাইল থেকে দেখে লিখছিল। পরীক্ষা হলে মোবাইল নিষিদ্ধ হলেও দুই শিক্ষকের সামনেই তারা মোবাইল থেকে উত্তরগুলো লিখছিল। নোয়াপাড়া ময়েজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আটক প্রণয় দাস জানিয়েছে, মেসেঞ্জার দিয়ে সে প্রশ্ন সংগ্রহ করেছে। কালীগঞ্জ থানার ওসি আলম চাঁদ জানান, প্রশ্ন ফাঁসে তিন পরীক্ষার্থীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সিলেটে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রসহ মো. দেলোয়ার হোসেন (১৮) নামের এক যুবককে গোয়েন্দা পুলিশ নগরের হাউজিং এস্টেটের আম্বরখানা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কলেজ এলাকা থেকে আটক করে। দেলোয়ার কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার কলিমপুর গ্রামের মো. হুমায়ুন কবিরের ছেলে এবং সিলেটের মদন মোহন কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। পরে মিলিয়ে দেখা যায়, তার মোবাইলের প্রশ্নপত্রেই গতকাল পরীক্ষা হয়েছে। দেলোয়ারের মোবাইল ফোনে পূর্বে অনুষ্ঠিত বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও পাওয়া যায়। আম্বরখানা ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ দেব জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। নরসিংদীর মাধবদীতে মাধবদী এসপি ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মেহেরুন নেসা ও ফরিদা ইয়াসমিন, লাইব্রেরিয়ান অঞ্জন দেবনাথ ও অভিভাবক মোখলেছুর রহমানকে ভ্রাম্যমাণ আদালত এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। পরীক্ষা চলার সময় শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিনের বাসায় প্রশ্নপত্রের সমাধান করা হচ্ছিল। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সেলিম রেজার নেতৃত্বে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে হাতেনাতে ধরা হয়। চট্টগ্রামের চন্দনাইশের একটি এসএসসি কেন্দ্রে দুই ঘণ্টা পরে গণিতের রচনামূলক প্রশ্ন পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্র দুটি হচ্ছে ফাতেমা জিন্নাহ বালিকা বিদ্যালয় ও কাসেম মাহাবুব উচ্চ বিদ্যালয়। রচনামূলকে প্রশ্ন সংকটের কারণে পাশের কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ ও ফটোকপি করে ফাতেমা জিন্নাহ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১১টা ১০ মিনিটে এবং কাসেম মাহবুব উচ্চ বিদ্যালয়ে ১২টা ৫ মিনিটে পরীক্ষা শুরু করা হয়। ফাতেমা জিন্নাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, কেন্দ্রসচিব মো. ওসমান বলেছেন, বোর্ড থেকে রচনামূলক প্রশ্নের যে পাঁচটি প্যাকেট দেওয়া হয়েছে এর মধ্যে একটি ছাড়া বাকিগুলোতে অন্য বিষয়ের প্রশ্ন ছিল। ইউএনও লুৎফর রহমান জানান, প্রশ্নপত্রের গায়ে গণিত লেখা ছিল; কিন্তু প্যাকেট খুলে অন্য প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। এ কারণে অন্য কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে ফটোকপি করতে হয়েছে। তিনি বলেন, প্রায় এক হাজার ১০০ প্রশ্নপত্র সংকট পড়েছিল। এর মধ্যে পাশের কেন্দ্রগুলো থেকে চার শতাধিক সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকিগুলো ফটোকপি করতে হয়েছে। ইউএনও ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘প্রতি কেন্দ্রে কিছু বাড়তি প্রশ্ন যায়। যেমন—কোনো কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী আছে ১০৫ জন; কিন্তু প্রশ্ন তো আর পাঁচটি আলাদা করে প্যাকেট হয় না। এ কারণে পুরো এক প্যাকেট প্রশ্ন পাঠানো হয়। অব্যবহৃত প্রশ্নগুলো কেন্দ্রে জমা থাকে। সে ধরনের প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করে চার শতাধিক পাওয়া যায়।’ এসব কাজে লাগানো সম্ভব হয়েছে। জানা যায়, ফাতেমা জিন্নাহ বালিকা বিদ্যালয়ে ৫৪৩ জন ও কাসেম মাহবুব উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৫৭ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে সাতজন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী আছে। অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন সঠিক পাওয়া গেলেও নিয়মিত এক হাজার ৯৩ জন পরীক্ষার্থীর জন্য প্রশ্ন পাওয়া যায় মাত্র ২১০টি। এ ছাড়া ফরিদপুরের সালথায় জয়ঝাপ উচ্চ বিদ্যালয় ও সালথা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কর্তব্যরত শিক্ষক নুরুল আমীন ও অঞ্জলি বিশ্বাসকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং নকল করার অভিযোগে তিন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। নওগাঁর বদলগাছী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের মহিলা কলেজ শাখায় এসএসসি গণিত পরীক্ষায় নকল সরবরাহের দায়ে মহিলা কলেজের পিয়ন মোশারফ হোসেনকে হাতেনাতে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট দুই পরীক্ষার্থীকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা বৈকুণ্ঠপুর স্কুলের ছাত্র সৈকত হোসেন ও আছির হোসেন। মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার তিন কেন্দ্রে ছয় ছাত্রকে বহিষ্কার এবং খালিয়া রাজারাম ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রের সচিব ও সহকারী সচিবকে পরিবর্তন করা হয়েছে। কেন্দ্রে প্রবেশ করে উত্তরপত্র তৈরির অপরাধে নড়াইলের কালিয়ার এক স্কুলশিক্ষককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সিএমবি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক এবাদত হোসেন একই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। এ ছাড়া গতকাল কুমিল্লার কম্পানিগঞ্জ উপজেলার বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ে দেখা যায় অভিনব দৃশ্য। অভিভাবকরা বেপরোয়া ভঙ্গিতে বাঁশের খুঁটিতে নকল বেঁধে পৌঁছে দিচ্ছিল পরীক্ষার্থীদের কাছে। এদিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে মাওনা পরীক্ষাকেন্দ্রের সহকারী সচিব আমজাদ হোসেন নাহিনকে (৪৫) পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হযেছে। নাহিন বেরাইদেরচালা ধনাই বেপারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। দায়িত্বরত পুলিশ ও কেন্দ্রসচিবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ১০টা থেকে গণিত পরীক্ষা চলছিল। আধাঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষাও প্রায় শেষ, ওই সময় পরীক্ষার্থীদের দেওয়ার জন্য সংরক্ষিত বান্ডেল থেকে সৃজনশীলের একটি প্রশ্নপত্র সরিয়ে ফেলেন আমজাদ হোসেন। পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বরত শ্রীপুর থানার শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শক (পিএসআই) নয়ন ভূইয়া বলেন, প্রশ্ন সরানোর দৃশ্যটি তাঁর চোখে পড়ে। এরপর ওই শিক্ষক কেন্দ্রের বাইরে যেতে চাইলে তাঁকে তিনি অনুসরণ করেন এবং বাইরে গিয়ে প্রশ্নপত্রটি সরবরাহ করার আগেই আটক করেন। পরে অনেকের উপস্থিতিতে দেহ তল্লাশি করে প্যান্টের পকেট থেকে একটি প্রশ্নপত্র উদ্ধার করা হয়। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান বলেন, পরে গুনে দেখা যায় উদ্ধৃত্ত প্রশ্নের মধ্যে একটি কম রয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হেলাল উদ্দিন বলেন, ওই ঘটনায় কেন্দ্রসচিব শাহজাহান সিরাজ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এই পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল করতে না দেওয়ায় পরীক্ষার পর এক শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়েছে এক পরীক্ষার্থীসহ তার সহযোগীরা। ওই শিক্ষককে ধাওয়াও করা হয় বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে ওই শিক্ষক ছুটে গিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণকক্ষে অবস্থান নেন। ওই শিক্ষকের নাম শাখাওয়াত হোসেন (৩০)। তিনি তেলিহাটী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কেন্দ্রসচিব শাহজাহান সিরাজ জানিয়েছেন, হামলাকারী টিপু মাওনা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আজ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। গতকাল দুপুর থেকেই এ বিষয়ের প্রশ্নের জন্য নানা পোস্ট দেওয়া হচ্ছিল।