অনলাইন ডেস্ক: জানুয়ারিতে নাসিরনগরে দুটি কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়ে এবং ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্
থীদের বিরুদ্ধে কাজ করে সমালোচিত হওয়ার পর, এবার হিন্দু সম্প্রদায়কে গালি দিয়ে নিন্দিত হলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক। হিন্দু সম্প্রদায়দের উদ্দেশে ‘মালাউন’ বলার প্রতিবাদে মুখর ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় সমাজের নানা স্তরের মানুষ মন্ত্রীর এই বক্তব্যকে সাম্প্রদায়িক উস্কানি বলে মনে করছেন। তারা জানতে চেয়েছেন, হিন্দু সম্প্রদায়কে অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ে এখনও পর্যন্ত ছায়েদুলের মন্ত্রীত্ব কিভাবে টিকে আছে। ফেসবুকে বিশিষ্টজনেরা অবিলম্বে মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে নাসিরনগরের ডাকবাংলোতে স্থানীয় সংখ্যালঘু নেতাদের উদ্দেশে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. ছায়েদুল হক ‘‘মালাউনের বাচ্চারা বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। আর এ ঘটনাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করে অতিরঞ্জিত করেছেন সাংবাদিকরা। অথচ ঘটনা কিছুই নয়’’-এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে ঢাকার কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। গত ৩ নভেম্বর ঢাকার দৈনিক ভোরের কাগজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোটেক রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার ক্ষমতায় থাকতে একজন মন্ত্রী হিন্দুদের নিয়ে এই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য কিভাবে করলেন? এতে জাতি বিস্মিত।’
গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘গণমাধ্যমে সরাসরি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের ‘মালাউনের বাচ্চা’ বলার পরও কিভাবে ছায়েদুল হক মন্ত্রী থাকেন, এটা আমার বোধগম্য নয়। অবিলম্বে এই সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীকে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কারের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আজ আওয়ামী লীগের জায়গায় যদি বিএনপি-জামাতের কোনও নেতা প্রকাশ্যে এভাবে ‘মালাউন’ শব্দটি ব্যবহার করতো, তাহলে সারাদেশে তোলপাড় হয়ে যেতো। গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীরা তুলকালাম কাণ্ড করে ফেলতেন! অথচ এই ঘৃণ্য অপরাধের পরও সবাই একদম চুপ। কারণ, তিনি আওয়ামী লীগ, কী বললে আবার কী হয়ে যায়! এক দেশে দুই নিয়ম চলবে না। এই জঘন্য সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীকে মন্ত্রিসভায় রাখলে আওয়ামী লীগকে স্বীকার করে নিতে হবে, তারা একটা সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল। আর তা না হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কথা পরিষ্কার।’
সিনিয়র সাংবাদিক বুলবুল চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মেঘ সাদা, আকাশ ঝরছে, গুমরে কাঁদছে বাংলাদেশ; অশ্রু-জলে ভিজছে নাসিরনগর, পোড়া বসতভিটের অনল থামে কী তাতে…।’