ফিচার

সাতক্ষীরা শিশু পরিবারে নির্যাতনের প্রতিবাদ করে শিক্ষার্থীরাই বহিষ্কার !

By Daily Satkhira

February 13, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা শিশু পরিবারে নির্যাতনের প্রতিবাদকারী ওই ৪ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা শিশু সদনের উপ-তত্ত্বাবোধায়ক জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত বহিস্কারাদেশ পত্র শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠানো হয়। বহিস্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, ধুলিহর এলাকার শওকত রহমানের ছেলে সাতক্ষীরা পল্লী মঙ্গল স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র এখলাসুর রহমান, একই এলাকার নুর আলী সরদারের ছেলে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম, বুধহাটা ইউনিয়নের কাদাকটি এলাকার নেসার আলী গাজীর ছেলে সাতক্ষীরা পল্লী মঙ্গল স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মুরশিদ গাজী ও পাটকেলঘাটা এলাকার আলী আহম্মদের ছেলে সাতক্ষীরা পল্লী মঙ্গল স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্র সবুজ হোসেন। গত কয়েকদিন পূর্বে শিশু পরিবারের একশিশুকে দিয়ে এক কর্মচারী তার মটর বাইক পরিস্কার করান। স্থানীয় একজন ব্যক্তি ওই ঘটনার ছবি তুলে বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পৌছে দেন। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বলছেন, ইতিপূর্বে এতিম শিশুদের দিয়ে লিঙ্গ মেহনের মত চরম ঘৃণ্য অপকর্ম করেও সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবারের কর্মচারীরা পার পেয়ে গেছেন। তাদেরকে কৌশলে বিচারের হাত থেকে বাঁচানো হয়েছে। শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আয়োজিত বিভিন্ন সেমিনারে অতিথির আসন অলংকৃত করে গলাবাজি করা ব্যক্তিরা নিজেরাই শিশু যৌন নিপীড়নকারীদের আইনের হাত থেকে রক্ষা করার শপথ নিয়েছেন। আর এর ফলশ্রুতিতে এতিম শিশুদের উপর নিপীড়নের মাত্রা আরও বেড়েছে। এদিকে শিশুদের ১৮বছর বয়স না হলেও তাদের নাম কর্তন করা প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেবাশিষ সরদার জানান, ওই ৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে শিশু পরিবারে বডি কমিটির এক সভায় তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। শিশুদের দিয়ে মটরবাইক পরিষ্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি আমিও দেখেছি। এটি খুব খারাপ কাজ হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেবো। বহিস্কৃত এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, গত বছরের জুলাই মাসে ঠিকমত খাদ্য না দেওয়া, ভয়ংকর যৌন নিপীড়নসহ বিভিন্ন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবারের ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মারপিট করে শিক্ষার্থীরা। এঘটনায় তৎকালীন সদর সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও দেবাশিষ চৌধুরী সকলকে শান্ত থাকতে বলেন এবং পরবর্তীতে বিষয়টি শুনে বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। পরবর্তীতে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পরও অপরাধের বিপরীতে দোষীদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অন্যদিকে ঘটনার ৮ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর উল্টো প্রতিবাদী শিশুদের বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে সাতক্ষীরা সচেতন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তৎকালীন ওই কর্মকর্তারা হলেন, অফিস সহকারী সাতক্ষীরার দেবনগর এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে তানভীর হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলার বিমল বৈরাগী, বড় ভাই (পদের নাম) নওগা জেলার মোজাফফার হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিন হোসেন ও কৌশিক। সে সময় শিশু পরিবারের এতিম শিশুরা জানায়, সরকার কর্তৃক দেওয়া সুযোগ সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত। তারা অসুস্থ হলেও তাদের ঠিকমত চিকিৎসা করানো হয় না। সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো ওই কর্মকর্তারা এতিম শিশুদের দিয়ে বিকৃত যৌনাচার করে। পুরুষের বিশেষ অঙ্গ না চুষলে তাদের অকথ্য নির্যাতন করা হয় বলেও জানিয়েছে শিশুরা। কথা না শুনলে ছোট ছোট বচ্চাদের বেদম মারপিট করে তারা। এবিষয়ে কারো কাছে নাশিল করলে তাদের জন্য আরও কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। তারপরও তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার বিচার দিলেও কোন ফল পায়নি বলে জানিয়েছে। কোন উপায় না পেয়ে ওই ৪ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে শিশুরা এধরনের কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। তবে আহত অফিস সহকারীরা এধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের সাথে তাদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু কি কারণে তারা আমাদের মারপিট করেছে তা তাদের জানা নেই। কতজন মেরেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন ৭২ জন শিক্ষার্থীই তাদের উপর হামলা করেছে।