সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় ধর্ষণ মামলায় তিন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রফতারি পরোয়ানা

By daily satkhira

February 18, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক : হুজুর ডেকে কাল্পনিক বিয়ে পড়ানোর পর অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়া এক নারীকে বাড়ি থেকে খুলনায় তুলে নিয়ে যেয়ে গণধর্ষণের পর গর্ভপাত ঘটিয়ে কয়েক দিন আটক রেখে মৃত্যুমুখে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আকতার রোরবার নির্যাতিতা মহিলার না-রাজির আবেদন শুনানী শেষে এ আদেশ দেন। গ্রেফতার পরোয়ানার আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের শেখ আব্দুল মোমিনের ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক, দেবীপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক গোলাম রসুল ও একই গ্রামের সুকুমার মণ্ডল। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ৩ ফেব্র“য়ারি যাদবপুর গ্রামের সুকুমার মণ্ডল ও গোলাম রসুল একই এলাকার এক নারীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ফুলবাড়ি গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিকের ঘেরের বাসায় নিয়ে যায়। ওই দিন বহু প্রতিশ্র“তি দিয়ে হুজুর ডেকে ছিদ্দিকের সঙ্গে ওই নারীর কাল্পনিক বিয়ে পড়ানো হয়। স্বামী স্ত্রী হিসেবে সময় পার করার একপর্যায়ে ওই নারী দু’মাসের অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়লে গত বছরের ১১ জুন সকালে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে খুলনায় একটি বাড়িতে আটক রাখা হয়। সেখানে পাঁচদিন যাবৎ ছিদ্দিক, সুকুমার ও গোলাম রসুল পালাক্রমে ধর্ষণ করে ওই নারীকে। ১৬ জুন রাইসা ক্লিনিকে ওই নারীর গর্ভপাত ঘটানো হয়। পরে তাকে বিভিন্ন স্থানে রেখে ২৫ জুন ছিদ্দিকের বোন রোজিনার মাধ্যমে বাড়ির পাশে নিয়ে ফেলে রেখে যাওয়া হয়। থানা মামলা না নেওয়ায় গত বছরের ২৬ জুলাই ওই নারী বাদি হয়ে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ওই তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে থানা মামলা নিলেও আসামীদের দারা প্রভাবিত হয়ে তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক লিটন মিঞা গত বছরের ৬ ডিসেম্বর আদালতে সকল আসামীদের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে ওই নারীর গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরি, একটি জাল এফিডেফিড, অন্যের মোবাইল সিম ওই নারীর দেখানোসহ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়। মামলার পর পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার না করায় ওই নারী সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কাছে তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিবর্তনের আবেদন জানান। মামলা তুলে নিতে রাজী না হওয়ায় ওই নারীর ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও অপহরণ মামলায় আসামী করা হয়। মামলার বিবরণে আরো জানা যায়, পুলিশের চুড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ওই নারী রোববার সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে না- রাজির আবেদন করেন। এ আবেদন জমা দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু তাতে সাক্ষর করেননি। পরবর্তীতে শুনানী শেষে তিনি সাক্ষর করেন। তবে তিনি না-রাজীর আবেদন শুনানীর জন্য সময়ের আবেদন জানালে বিচারক তা খরিজ করে দিয়ে তিন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। না-রাজীর আবেদনে প্রথমে বিশেষ পিপি’র সাক্ষর না করা ও তিন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. সেলিনা আক্তার শেলী।#