স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে এমপি জানতে পারেন টয়লেটটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারছে না। মাটি দিয়ে কমোডের মুখ ভরাট হয়ে গেছে। সেখান দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় না। টয়লেটে গিয়ে এমন বেহাল দশা দেখে এমপি নিজেই লেগে গেলেন তা পরিষ্কার করতে। খালি হাতে কমোডের মুখ থেকে মাটি সরান তিনি। ভারতের মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলায় খাজুহা গ্রামের সরকারি এক স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার নায়ক বিজেপির স্থানীয় এমপি জনার্দন মিশ্র (৬১)। আজ এনডিটিভি অনলাইনে এ খবর প্রকাশ করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের এমপি জনার্দন মিশ্রের টয়লেট পরিষ্কারের এ দৃশ্য ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমপি ভিডিওটি তাঁর টুইটারে পোস্ট করেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এমপি কমোডের মুখের ভেতর হাত ঢুকিয়ে মাটি তুলে আনছেন। একপর্যায়ে একটি কাঠি দিয়ে তিনি কমোডের ভেতরের মাটি আলগা করে আবার তা হাত দিয়ে তুলে আনেন। পরে মগ দিয়ে পানি ঢেলে প্রবাহ পরীক্ষা করেন। কমোড দিয়ে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তিনি তা পরিষ্কার করে যাচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভিডিওটি প্রচারের পর তা ৩০ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং রিটুইট হয়েছে ১ হাজার ৬০০ বার। এর আগে ভারতের দুই মন্ত্রীর প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগের ছবির বিপরীতে একজন এমপির এই কর্মকাণ্ড প্রশংসিত হয়েছে সব মহলে।
পরদিন শুক্রবার আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, এই এমপি রেওয়া নগরের রাস্তা ঝাড়ু দিচ্ছেন। আজ রোববার প্রকাশিত আরেক ভিডিওতে দেখা গেছে, এমপি স্কুলের এক শিক্ষার্থীর নখ পরিষ্কার করে দিচ্ছেন এবং শিক্ষার্থীদের পরিচ্ছন্ন থাকার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে বোঝাচ্ছেন।
তবে এই এমপি এমন কাজ এই প্রথম করেছেন তা নয়; এর আগে ২৩ জানুয়ারি তাঁর আরেক ভিডিও লোকজনের নজর কাড়ে। সরকার পরিচালিত স্কুল নায়ি গারহিতে গিয়ে এমপি জনার্দন মিশ্র দেখেন, অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে এসেছে গোসল না করে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায়। এমন এক শিশু ছাত্রকে তিনি গোসল করিয়ে দেন। ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এমপি হাত দিয়ে ওই ছাত্রের পা ঘষে ঘষে পরিষ্কার করছেন।
কয়েক দিন আগে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে জয়পুরে। সেখানে রাজস্থানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কালীচরণ সরাফের রাস্তার পাশের দেয়ালে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগের ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। তবে মন্ত্রী বিষয়টিকে পাত্তা না দিয়ে বলেছিলেন, ‘এটা এমন বড় কিছু নয়।’ ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ নামে কর্মসূচি নেন। নিরাপদ পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্ন সড়ক নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে—সবার জন্য টয়লেট। দেশটির ২০১১ সালের সমীক্ষা অনুসারে, ৫৩ শতাংশ বাড়িতে কোনো টয়লেট নেই। নরেন্দ্র মোদির কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্বচ্ছ ভারত গড়ার উদ্দেশ্যে জনার্দন মিশ্রের মতো অগোচরে থাকা অনেক ব্যক্তি কাজ করে চলেছেন।