বিনোদন

শ্রীদেবীর অকাল মৃত্যুর কারণ কি ‘সৌন্দর্য’ ধরে রাখার ওষুধ?

By Daily Satkhira

February 26, 2018

সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবী। শ্রীদেবীর আকস্মিক মৃত্যু সাধারণ মহলে এক ধরনের বিস্ময় তৈরি করেছে।

কেননা, হঠাৎ করেই প্রিয় অভিনেত্রীর মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না।

আমরা সাধারণত সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষ হঠাৎ করে মারা গেলে তাকে আকস্মিক মৃত্যু বলে থাকি বা সাডেন আনএক্সপ্লেনড ডেথ ইন অ্যাডাল্টস। অনেকেই আবার একে সাডেন অ্যডাল্ট ডেথ সিনড্রোম বলে থাকেন।

সাধারণত হার্টের অসুখকে এ ধরনের মৃত্যুর কারণ ভাবা হয়ে থাকলেও, সবক্ষেত্রে এমনটি নাও হতে পারে।

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী ইংল্যান্ডে প্রতি বছর প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন এ ধরনের আকস্মিক মৃত্যুর শিকার হন, যারা কিনা আপাতদৃষ্টিতে স্বাস্থ্যবান। নিহতের পোস্টমর্টেমের পরেও এদের মধ্যে ৪ শতাংশের মৃত্যুর কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে এদের অনেকেরই আপাত স্বাস্থ্যবান অবস্থায় গভীর হার্টের অসুখের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়।

অনেকেই ভাবছেন, সাডেন আনএক্সপ্লেন্ড ডেথ ইন অ্যডাল্টস (Sudden unexplained death in Adults ) এর সংজ্ঞা কী?

আসুন জেনে নেই, সাডেন আনএক্সপ্লেন্ড ডেথ ইন অ্যডাল্টস হলো- এমন এক ধরনের আকস্মিক মৃত্যু, যেখানে রোগীর উপসর্গ শুরু থেকে মৃত্যু এত দ্রুততায় ঘটে যায় যে, চিকিৎসকের পক্ষেও রোগীর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট করে বলা সম্ভব হয় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই সময়সীমা ২৪ ঘন্টা ধার্য করলেও বেশিরভাগ চিকিৎসক এবং প্যাথলজিস্ট এই সময়সীমা কমানোর পক্ষে। কেউ কেউ একে এক ঘণ্টার মধ্যে সীমিত রাখতে চান।

তবে এর আগে এ ধরনের রোগীদের মধ্যে অনেকেরই কিছু কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন: বুক ধড়ফড়, হৃদপিন্ডের ছন্দের অনিয়মিততা, হাঁফ ধরা, ক্লান্তি, বুকে ব্যথা। রোগীরা সাধারণত এগুলোকে গুরুত্ব দেন না। এদের অনেকের আকস্মিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে হার্টের কিছু রোগ যেমন- হার্টের ধমনীর অসুখ, হার্টের পেশীর অসুখ, হার্টের পেশীর প্রদাহ এইগুলি দায়ী থাকে। পোস্টমর্টেমে এগুলোই ধরা পড়ে।

হার্টের রোগ ছাড়াও স্নায়ুরোগ, জটিল এপিলেপ্সি, মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ ও টিউমার জনিত অসুখের কারণে আকস্মিক মৃত্যু হতে পারে। এ ধরনের মৃত্যু খেলোয়াড় এবং অ্যাথলিটদের ক্ষেত্রেও দেখা যায়। আপাত-সুস্থ খেলোয়াড়দের মধ্যে ম্যরাথন দৌড় দেওয়ার পরে কিংবা বাইচ দৌড়ের পরে আকস্মিক মৃত্যুর বহু ঘটনা রয়েছে। এ ধরনের আকস্মিক মৃত্যু সম্পর্কে প্রাচীন যুগের বিশিষ্ট চিকিৎসক হিপোক্রেটিস এবং গ্যালেন বলে গিয়েছেন।

কিছু ওষুধ থেকেও আকস্মিক মৃত্যু ঘটতে পারে। যেমন বোটক্স। এই ওষুধ মুখের মাংসপেশির কোঁচকানো ভাব দূর করতে ব্যবহার করা হয়। বোটক্স ব্যবহার করলে বিশেষ করে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের নারীদের আকস্মিক মৃত্যু হওয়ার রিপোর্ট রয়েছে। এছাড়া মানসিক অবসাদের কিছু ওষুধ যেমন সিটালোপ্রাম বেশি মাত্রায় খেলে হার্টের ব্লক ঘটতে পারে।

এগুলোর পরও এ ধরনের বহু মৃত্যুর ক্ষেত্রে সঠিক কারণ জানা যায় না।

বিশিষ্ট চিকিৎসক-গবেষকরা মত প্রকাশ করেছেন, এ ধরনের মৃত্যু নিয়ে আরো বিস্তর গবেষণার জন্য ওই সমস্ত পরিবারের জীবিত সদস্যদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিশেষ প্রয়োজন।