সাতক্ষীরা

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে শালিক সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি

By daily satkhira

November 07, 2016

জি.এম আবুল হোসাইন : সদর উপজেলার বলাডাঙ্গা, মাধবকাটি, তুজলপুর, ঝাউডাঙ্গা সহ বিভিন্ন এলাকা এক সময় শালিক পাখিতে ভরপুর ছিল। ভোর হলেই কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙতো গ্রামের মানুষের। আবার কখনো সন্ধ্যায় কিচিরমিচির আওয়াজ তুলে বসত পাখিদের আসর। কিন্তু আজ কালের গর্ভে এসব এলাকা থেকে বিলুপ্তির পথে শালিক পাখি। আগের মত আর চোখে পড়ে না। নেই বললেই চলে। আমাদের অতি পরিচিত ও চেনা জানা উপকারী প্রধান কয়েকটি পাখির মধ্যে অন্যতম হলো শালিক পাখি। ছোট আকৃতির এ পাখি গুলো অত্যন্ত নিরীহ ও শান্ত স্বভাবের। এরা আমাদের ফসলি জমির ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খেয়ে কৃষিপণ্য উৎপাদনে সহায়তা করে। এক সময় সকাল সন্ধ্যায় কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত করে তুলতো পল্লী গাঁয়ের বাঁশ বাগান ও বিলের ধার। মনে হতো এ যেন শালিক পাখির হাট বসেছে। কিন্তু এখন বড়ই দুঃখের বিষয়, ফসলের জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারে সেই কীটনাশক খেয়ে সবার পরিচিত এই পাখি অকালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছে। আবার অধিকাংশ বিলের কিছু পাখি খেকো মানুষদের শিকারের বলি হচ্ছে নিরীহ শালিক পাখি। আখড়াখোলা, ভাটপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ফাঁদ পেতে প্রতি রাতে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন পাখি। এছাড়া দিনের বেলায়ও থেমে নেই পাখি ধরার কার্যক্রম। পরিবেশ ও কৃষির বিশেষ উপকারী এসব পাখি গুলোই অবাধে নিধন করা হচ্ছে। পাখি শিকারীরা বিভিন্ন ফাঁদ পেতে কৌশলে শালিক পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি নিধন ও প্রকাশ্যে বাজারে বিক্রি করছে। পাখি রক্ষায় এগিয়ে আসছেনা সমাজের কোন সচেতন ব্যক্তি বা প্রশাসন। দেশে পাখি নিধন আইন থাকলেও নেই শুধু আইনের প্রয়োগ। আইনের প্রয়োগ না থাকায় এক শ্রেণির মানুষ পাখি শিকারকে এখন মূূল পেশা হিসেবে গ্রহণ করছে। মূলত পাখি শুধু পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে না প্রকৃতির সৌন্দর্য্যও বাড়ায়। তাই শালিক পাখিসহ সব শ্রেনীর পাখি নিধন বন্ধের পাশা-পাশি সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রাম গুলোতে পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলা এখন আমাদের সকলের দায়িত্ব। এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি পরিবেশ বান্ধব সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সকলে এগিয়ে আসলেই শালিক সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রক্ষা সম্ভব হবে। সেই সাথে দরকার গণসচেতনতা ও পাখি নিধন আইনের যথার্থ প্রয়োগ।