স্পোর্টস ডেস্ক: নতুনভাবে আজ থেকে আবারো শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টোয়েন্টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের চতুর্থ আসর। গেল শুক্রবার চতুর্থ আসরের যাত্রা হয়েছিলো। কিন্তু ঐদিন থেকেই উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টি হলে বিপিএলের প্রথম দু’দিনের চারটি খেলাই পরিত্যক্ত হয়ে যায়। ফলে দ্বিতীয় দিনেই বিপিএল স্থগিত করে আবারো নতুনভাবে ৮ নভেম্বর থেকে শুরুর সিদ্বান্ত নেয় টুর্নামেন্টের গর্ভনিং কাউন্সিল কমিটি। তাই আজ থেকে আরও একবার নতুন করে শুরু হচ্ছে বিপিএল।
উদ্বোধনী দিনে দুপুর ২টায় মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও চিটাগাং ভাইকিংস এবং সন্ধ্যা ৭টায় লড়বে বরিশাল বুলস ও ঢাকা ডায়নামাইটস।
বৃষ্টির কারণে বিপিএলের এবারের আসরের প্রথম দুই দিনের চারটি ম্যাচই পুনরায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দিন পরিত্যক্ত হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রাজশাহী কিংস এবং রংপুর রাইডার্স ও খুলনা টাইটান্সের ম্যাচ দু’টি। আগামী ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা ও রাজশাহীর ম্যাচটি। ঐ দিন সন্ধ্যার বরিশাল বুলস ও রাজশাহী কিংসের ম্যাচটি ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে। আগের সূচিতে ১ ডিসেম্বর কোন ম্যাচ ছিলো না।
আর উদ্বোধনী দিন রংপুর রাইডার্স ও খুলনা টাইটান্সের পরিত্যক্ত হওয়া দ্বিতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১০ নভেম্বর। আগের সূচিতে ১০ নভেম্বর কোন ম্যাচ ছিলো না।
উদ্বোধনী দিনের পরের দিন বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়ে যায় বরিশাল বুলস ও চিটাগাং ভাইকিংস এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ঢাকা ডায়নামাইটসের ম্যাচগুলো। এই দু’টি ম্যাচ হবে ১৪ নভেম্বর। আগের সূচিতে ১৪ নভেম্বর কোন ম্যাচ ছিলো না।
এছাড়া ৬ নভেম্বরের ম্যাচ আগেই স্থগিত করে দেয় বিপিএলের গর্ভনিং কাউন্সিল কমিটি। রংপুর রাইডার্স ও রাজশাহী কিংস এবং বরিশাল বুলস ও খুলনা টাইটান্সের ম্যাচ দুটি নতুন সূচিতে হবে যথাক্রমে ২৮ নভেম্বর ও ২০ নভেম্বর। এই দু’দিন বিপিএলের বিরতি ছিলো। দুটি ম্যাচই হবে সন্ধ্যায়।
আগের সূচি অনুযায়ী আজ বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে লড়বে কুমিল্লা ও চিটাগাং। কুমিল্লার নেতৃত্ব আছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে ও টি-২০ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আর চিটাগাং-এর অধিনায়ক জাতীয় দলের ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। দু’দলেই তারকা খেলোয়াড়দের ছড়াছড়ি বেশ।
কুমিল্লায় আছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট জয়ী বাংলাদেশ দলের ওপেনার ইমরুল কায়েস, জাতীয় দলের হয়ে ৩টি করে টেস্ট ও টি-২০ এবং ৯টি ওয়ানডে খেলা উইকেটরক্ষক লিটন দাস, অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শরীফ ও বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদ।
বিদেশীদের মধ্যে আছেন পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ, ইমাদ ওয়াসিম, খালিদ লতিফ, শাহজিব হাসান, সোহেল তানভীর, গেল আসরের সেরা খেলোয়াড় আসার জাইদি, শ্রীলংকার নুয়ান কুলাসেকেরা, আফগানিস্তানের রশিদ খান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারলন স্যামুয়েলস, জেসন হোল্ডার ও রোভম্যান পাওয়েল। তাই সববিভাগেই বেশ ভারসাম্যপূর্ণ দল কুমিল্লা। এবারও শিরোপা ধরে রাখার মিশনেই নামবে কুমিল্লা। তবে নিজের লক্ষ্য জানাতে গিয়ে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বলেছিলেন, ‘আমার প্রথম লক্ষ্য এলিমিনেটর ও কোয়ালিফাইয়ার পর্ব। তারপরও ফাইনাল নিয়ে ভাববো আমরা।’
কুমিল্লার মতই বেশ শক্তিশালী এবং ভারসাম্যপূর্ণ দল চিটাগাংও। তামিমের সাথে আছেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়, অভিজ্ঞ বাঁ-হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক, পেসার তাসকিন আহমেদ, সাকলাইন সজীব ও জুবায়ের হোসেনের মত লেগ-স্পিনার।
বিদেশীদের কোটাতে বেশ শক্তিশালী সংগ্রহ আছে চিটাগাং-এর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বিশ্বের অন্যতম সেরা টি-২০ খেলোয়াড় ক্রিস গেইল, ডোয়াইন স্মিথের সাথে আছেন পাকিস্তানের শোয়েব মালিক, আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী, শ্রীলংকার জীবন মেন্ডিস ও চতুরঙ্গা ডি সিলভা।
তাই দুই দলের এমনসব তারকাদের অন্তর্ভূক্তিতে বিপিএলের চতুর্থ আসরে আবারো নতুনভাবে শুরু হওয়া উদ্বোধনী ম্যাচটি যে উত্তেজনায় ঠাসা থাকবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স :
দেশি ক্রিকেটার: মাশরাফি বিন মর্তুজা (আইকন), ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মোহাম্মদ আল-আমিন, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোহাম্মদ শরীফ, নাবিল সামাদ, জসীমউদ্দিন, সৈকত আলী, রাসেল আল মামুন।
বিদেশী ক্রিকেটার: ইমাদ ওয়াসিম, আসার জাইদি, শাহজিব হাসান, সোহেল তানভির, নুয়ান কুলাসেকারা, রশিদ খান, খালেদ লতিফ, মারলন স্যামুয়েলস, রোভম্যান পাওয়েল ও জেসন হোল্ডার।
চিটাগাং ভাইকিংস :
দেশি ক্রিকেটার: তামিম ইকবাল (আইকন), তাসকিন আহমেদ, এনামুল হক বিজয়, আব্দুর রাজ্জাক, শুভাশীষ রায়, জহুরুল ইসলাম, নাজমুল হাসান মিলন, জাকির হাসান, সাকলাইন সজীব, শহিদুল ইসলাম, ইয়াসির আলী ও জুবায়ের হোসেন লিখন।
বিদেশী ক্রিকেটার: ক্রিস গেইল, চতুরঙ্গা ডি সিলভা, ডোয়াইন স্মিথ, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ নবী, গ্র্যান্ট ইলিয়ট, ইমরান খান জুনিয়র, জীবন মেন্ডিস, টাইমাল মিলস।
কুমিল্লা-চিটাগাং-এর ম্যাচের পর সন্ধ্যায় লড়বে বরিশাল বুলস ও ঢাকা ডায়নামাইটস। গেল আসরে সিলেট সুপার স্টার্সে খেলা বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম এবার নেতৃত্ব দিবেন বরিশালের। তার সাথে আরও আছেন ওপেনার শাহরিয়ার নাফীস, স্পিনার তাইজুল ইসলাম, পেসার আল-আমিন হোসেন। আর বিদেশীদের তালিকায় আছেন- ওয়েস্ট ইন্ডিজের কালোর্স ব্রার্থওয়েট, শ্রীলংকার থিসারা পেরেরা, দিলশান মুনাবেরা ও পাকিস্তানের মোহাম্মদ নাওয়াজ ছাড়াও আরও অনেক তারকা।
কাগজে কলমে বরিশালের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ঢাকা। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সাথে আছেন নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনের মত তারকা খেলোয়াড়রা। আর বিদেশীদের কোটায় আছেন- দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় শ্রীলংকার মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভো ও আন্দ্রে রাসেল, ইংল্যান্ডের রবি বোপারা, শ্রীলংকার সেকুজে প্রসন্ন।
ঢাকা ডায়নামাইটস :
দেশি ক্রিকেটার: সাকিব আল হাসান (আইকন), মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাসির হোসেন, সানজামুল ইসলাম, আলাউদ্দিন বাবু, সোহরাওয়ার্দী শুভ, মেহেদী মারুফ, মোহাম্মদ শহীদ, ইরফান শুক্কুর, তানভীর হায়দার।
বিদেশী ক্রিকেটার: কুমার সাঙ্গাকারা, এভিন লুইস, আন্দ্রে রাসেল, মাহেলা জয়াবর্ধনে, ডোয়াইন ব্রাভো, রবি বোপারা, সেকুজে প্রসন্ন, ওয়েন পারনেল, ওসামা মীর।
বরিশাল বুলস :
দেশি ক্রিকেটার: মুশফিকুর রহিম (আইকন), আল-আমিন হোসেন, তাইজুল ইসলাম, শামসুর রহমান শুভ, আবু হায়দার রনি, কামরুল ইসলাম রাব্বি, নাদিফ চৌধুরী, মেহেদী হাসান, মনির হোসেন, শাহরিয়ার নাফীস।
বিদেশী ক্রিকেটার: দিলশান মুনাবেরা, মোহাম্মদ নাওয়াজ, কার্লোস ব্রার্থওয়েট, জশ কব, রায়াদ এমরিত, ডেইড মালান, থিসারা পেরেরা।