ডেস্ক রিপোর্ট: বিনা বিচারে ১৬ বছর কারাবন্দী ঢাকার সূত্রাপুরের মো. শিপন অবশেষে জামিন পেলেন। মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি উচ্চ আদালতের আদেশ পাওয়ার ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে. বি. এম. হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালত বলেছেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব সংবিধান অনুসারে দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্টরা ব্যর্থ হয়েছেন। এটি সবার জন্যই লজ্জাকর। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম জহিরুল হক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শহীদুল ইসলাম খান। গত ২৬ অক্টোবর বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে এ বিষয়ে একটি সংবাদ প্রচারিত হয়। ৩০ অক্টোবর ওই প্রতিবেদনের অনুলিখন ও সিডি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্ট ওই দিনই ২২ বছর আগে দায়ের হয়ে নিষ্পত্তি না হওয়া রাজধানীর সূত্রাপুর থানার ওই হত্যা মামলার নথি তলব করেন। পাশাপাশি শিপনকে আজ আদালতে হাজির করতে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে তাঁর জামিন প্রশ্নে রুল দেন। আজ আদালত শুনানি নিয়ে ওই আদেশ দেন। পাশাপাশি শিপনের বক্তব্যও শোনেন আদালত।টেলিভিশন চ্যানেলটির প্রতিবেদন উপস্থাপনকারী ছিলেন আইনজীবী কুমার দেবুল দে।আদালতের জিজ্ঞাসার জবাবে শিপন বলেন, হত্যার ঘটনা তিনি শুনেছেন। তবে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন। ঘটনার পর তাঁকে ধরে নিয়ে হাত কেটে দেওয়া হয়।আদালত মো. শিপনকে প্রশ্ন করেন, জামিন পেলে তিনি কোথায় যাবেন? তিনি বলেন, মা-বাবার কাছে যাব। মা–বাবার সঙ্গে যোগাযোগ আছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে শিপন বলেন, যোগাযোগ নেই। আর কে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছয় বোন রয়েছেন। তিনিই একমাত্র ভাই। বোনদের সঙ্গেও যোগাযোগ নেই। তবে মা–বাবা মারা গেলে খবর পেতেন বলে জানান শিপন। এও জানান, তিনি বাড়িতে গিয়ে মা-বাবাকে খুঁজবেন।আদালত জানতে চান বিচারিক আদালতে শিপনের পক্ষে কোনো আইনজীবী আছে কি না। উত্তরে শিপন বলেন, না।পুনর্বাসনের আবেদন করলে শিপনকে জামিননামাসহ সব ধরনের আইনগত সহায়তা দিতে ঢাকা লিগ্যাল এইড অফিসকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মাহতাব নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে ১৯৯৪ সালের ২৫ অক্টোবর সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়। পরের বছর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মামলার দুই নম্বর আসামি মো. শিপন ২০০০ সালের ৭ নভেম্বর থেকে কারাগারে আছেন। চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল থেকে মামলাটি ঢাকার পরিবেশ আপিল ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।