নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশ বরেণ্য লেখক বুদ্ধিজীবী সিলেট শাবিপ্রবি এর শিক্ষক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ওপর জঙ্গিবাদী হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদী মানববন্ধন ও সাংবাদিক সমাবেশ। সমাবেশে বক্তারা, হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি একই সাথে এঘটনায় প্রকাশ্যে ও নেপথ্যে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচনের দাবি জানিয়েছেন। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ সাংবাদিক সমাবেশ ও প্রতিবাদী মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতারা বলেন, দেশের মুক্তমনা লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী অসাম্প্রদায়িক মানুষকে জঙ্গিরা বেছে বেছে হত্যার পরিকল্পনা করেছে। ড. জাফর ইকবাল তাদেরই হামলার শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে তারা আরও বলেন এর আগে তার ওপর আরও দুই দফায় হামলা হয়েছে। দেশ থেকে জঙ্গিবাদ এখনও নির্মুল হয়নি মন্তব্য করে তারা আরও বলেন এখনই আরও কঠোর ভূমিকা না গ্রহণ করলে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে। বক্তারা আরও বলেন এই পরিকল্পিত হামলার নেপথ্যে আরও যারা রয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’র শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন। ৩ মার্চ হামলার ঘটনার পর চারদিন অতিবাহিত হলেও এর প্রকাশ্যে ও নেপথ্যে জড়িতদের সার্বিক তথ্য প্রকাশ না করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতির প্রস্তাবক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকে মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যা, কবি শামসুর রহমান, প্রথা বিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদ হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতারই অংশ বলে মনে করেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। প্রতিবাদী মানববন্ধন ও সাংবাদিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, প্রথম আলোর কল্যাণ ব্যনার্জি, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারী, সাবেক সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সাবেক সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাহিত্য সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক আমিনা বিলকিস ময়না, কার্যনির্বাহী সদস্য অসীম বরণ চক্রবর্তী, মানবজমিনের ইয়ারব হোসেন প্রমুখ সাংবাদিক। উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াজেদ কচি, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম সরোয়ার, সাপ্তাহিক সূর্য্যরে আলো’র আব্দুল ওয়ারেশ খান চৌধুরী পল্টু, মোহনা টিভি’র আব্দুল জলিল, এসএ টিভি’র শাহীন গোলদার, দৈনিক যশোরের সেলিম রেজা মুকুল, দৈনিক সমাজের কাগজ আমিরুজ্জামান বাবু, দৈনিক তথ্য’র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম শাওনসহ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ। সাংবাদিক নেতারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করার আগে বলা হয়েছিল এ আইনের মাধ্যমে অনলাইনে জঙ্গিবাদী ও সাম্প্রদায়িক তৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই এর প্রয়োগ করা হবে। কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের সাথে দেশের সচেতন সাংবাদিক সমাজ লক্ষ্য করলো ঘটনা ঘটলো উল্টো পুরো আইনটিই সাংবাদিকদের মুক্তচিন্তা ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সংকুচিত করতে এই আইন প্রয়োগ করা হলো। রাষ্ট্র’র নীতি নির্ধারকরা খুনী হেফাজতদের কাছে আপত্তিকর আত্মসমর্পন করলো। যারা সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও ব্লগারদের বেছে বেছে হত্যা করলো তাদের কাছেই নতজানু হলো। খুনীদের খুনকে একধরণের উৎসাহ প্রদান করা হলো। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ- দেশের মানুষ ও রাষ্ট্রকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে আসার আহবান জানান। #
০৬.০৩.১৮