ফিচার

সাতক্ষীরার আম এবারও ইউরোপে পাঠাতে গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা

By Daily Satkhira

March 11, 2018

আসাদুজ্জামান: ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গত ৪ বছর যাবত সাতক্ষীরার আম বাজারজাত হচ্ছে। চলতি বছরও সাতক্ষীরায় আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন আম চাষিরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি আম গাছে প্রচুর পরিমান মুকুল দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর সাতক্ষীরায় আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন আম চাষিরা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে সাতক্ষীরার আম বেশ সাড়া জাগিয়েছে। বিশেষ করে এখানকার মাটি ও আবহাওয়া আম চাষের অনুকূল হওয়ায় অন্যান্য অঞ্চলের উৎপাদিত আমের চেয়ে সাতক্ষীরার আম খেতে বেশ সুস্বাদু। আর তাই গত চার বছর ধরে সাতক্ষীরার আম বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় সাতটি উপজেলায় চলতি বছরে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১৯৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ৬০২ হেক্টর, তালা উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৮ হেক্টর কালিগঞ্জ উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১২৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায়ং ১৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে আমের বাগন রয়েছে ১৫৩০টি, কলারোয়ায় ১৩১০টি, তালায় ১৪৫০টি, দেবহাটায় ৪৭৫টি, কালিগঞ্জে ১৪২টি, আশাশুনিতে ১৯০টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০টি আমের বাগান রয়েছে। এখারকার মাটি ও আবহাওয়া আম চাষের অনুকূল হওয়ায় অন্য অঞ্চলে উৎপাদিত আমের চেয়ে সাতক্ষীরার আম খেতে বেশ সুস্বাদু। এ জেলায় গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাইসহ নানা জাতের আম বাগান রয়েছে। আম গাছের পরিচর্যার জন্য নানামুখী কর্মযজ্ঞে মেতে উঠেছে শত শত মৌসুমী শ্রমিক। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রায় ১০০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত বছর যার পরিমাণ ছিল ৭০০ মেট্রিক টন। আম চাষি দিদারুল আলম বুলু ও সাদেকুর রহমান জানান, তারা ৮টি আমের বাগান কিনেছেন। বাগান কিনতে তাদের খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। আম বাগান পরিচর্যা করতে এ পর্যন্ত তাদের খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আম বাগান ২০ লাখ টাকার কেনাবেচা হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা। তারা আরো বলেন, তাদের প্রতিটি আম বাগনে আমের গুটি আসতে শুরু করেছে। এই সময় মাঝরা পোকার ভয় থাকে গুটি কেটে দেওয়ার তাই বাগানে তারা সার্বক্ষনিক স্প্রেসহ নানা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচারক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান জানান, সাতক্ষীরার আম গুণে-মানে সুস্বাদু। অন্যান্য জেলার থেকে সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। এ জেলার মাটি আম চাষের উপযোগী। গত চার বছর ধরে এ জেলার আম ইউরোপে রফতানি হচ্ছে। এবারও বাগান পরিচর্যা করা হচ্ছে বিদেশে আম পাঠানোর জন্য। বিশেষ করে হিমসাগর ও ন্যাংড়া। তিনি আরো বলেন, আম চাষিদের দাবির প্রেক্ষিতে চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় উৎপাদিত আম যাতে বিদেশে যেতে কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।