আন্তর্জাতিক

গণমাধ্যমসহ সবাইকে ঘোল খাওয়ালেন ট্রাম্প

By Daily Satkhira

November 09, 2016

ডেস্ক রিপোর্ট: ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া পূর্বোক্ত সকল আভাসের সম্পূর্ণ বিপরীত।  অধিকাংশ গণমাধ্যম প্রতিবেদক, জনমত এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা যেমন  হিলারিকেই হোয়াইট হাউসের পথে দেখছিলেন তা ভুল প্রমাণিত হলো। সকল বিতর্ক, জয় ঘিরে সংশয়কে পেছনে ফেলে ট্রাম্পের জয় একটা তাৎপর্যপূর্ণ শিক্ষা দেয়। আর তা হলো দেশের মানুষের ক্ষোভের গভীরতা অনুধাবনে ব্যর্থতা, পলিটিকাল-মিডিয়া স্টাবলিশমেন্ট বা রাজনীতির ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের কোন কিছু প্রতিষ্ঠা করতে চাওয়া বা চাপিয়ে দেওয়ার নেতিবাচক প্রবণতা। আজকের ঘটনার পরে নিঃসন্দেহে এই স্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধ অবস্থানে চলে যাবে আমেরিকানরা।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনমানি’তে ডিলান বাইয়ার্সের লেখা একটি প্রতিবেদনে দেশের গণমাধ্যমের কিছু চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধে জনগণের অবস্থান হিসেবেও উল্লেখিত হয়েছে ট্রাম্পের বিজয়। গ্রাম্য এলাকার শ্বেতকায়রাই ট্রাম্পের জয় এনে দেবে বলে কিছু কথিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের প্রত্যাশা অবশেষে সত্যি হলো।

মার্কিন গণমাধ্যমের এমন চরম ভুলের কথা এবং তাদের প্রতি বিশ্বাসের ঘাটতির কথা উঠে আসে প্রতিবেদনে। নির্বাচনের তিন দিন আগেও কয়েকটি গণমাধ্যম ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাব্যতার হার এতোটাই নিম্ন দেখায় যা তাদের বাস্তব বিচ্ছিন্নতারই পরিচায়ক। যেমন, হাফিংটন পোস্টের (২ শতাংশ), দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের (১৫ শতাংশ) ইঙ্গিতের পর আজকের ফল রীতিমতো বিস্ময়কর। তবে ওই সময়টাতে রাজনৈতিক পরিসংখ্যানবিদ ন্যাটে সিলভার ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা দেখেন ৩৫ শতাংশ এবং ইউএসসি/লস এ্যাঞ্জেলস টাইমস ট্রাম্পের সমর্থন বাড়ার একটি চিত্র দিয়েছিলেন।

গ্রাম্য শ্বেতকায় ট্রাম্প সমর্থকরা কতটা প্রভাব রাখতে পারে তা বুঝতে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে গণমাধ্যম। তাছাড়াও তারা হিলারির পক্ষে হিস্পানিক এবং আফ্রিকান-আমেরিকানদের অতিমূল্যায়িত করেছেন।

“নিজ দেশের সাথে গণমাধ্যমগুলো অনেকটাই সম্পর্কহীন হয়ে গেছে।” বলেন প্রোপাবলিকার রাজনীতিবিষয়ক ঝানু সাংবাদিক এ্যালেস ম্যাকগিলিস। বলেন, “এই ব্যবধানটা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সব গণমাধ্যম এখন ওয়াশিংটন, ডি.সি.তে। নিউ ইয়র্কের প্রভাবে কমছে স্থানীয় ও মেট্রো পত্রিকা। এই শহরগুলো এবং অবশিষ্ট দেশের ভাবনার মধ্যে ব্যবধানটা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।”

আজকের নির্বাচন বিষয়ে এমন ভুল ইঙ্গিত দেয়ায় অনেকেই তাদের তিক্ততা ঝাড়েন। “রাজনীতিতে ৩০ বছর ধরে তথ্যের উপর আমার  বিশ্বাস ছিলো এবং আজ রাতে তথ্য মারা গেছে।” অভিজ্ঞ রিপাবলিকান স্ট্র্যাটেজিস্ট মারফি এমন টুইট করেন। লিখেন, “এই নির্বাচন নিয়ে আমি এর চেয়ে বেশি ভুল করতে পারতাম না।”

ডেমোক্রেটিক দলের পলিটিকাল স্ট্র্যাটেজিস্ট ডেভিড প্লোফি এবং ২০০৮ সালে বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রচারণা দলের ম্যানেজার বলেন, “কোন বিষয়ে এতোটা ভুল জীবনে কখনো হয়নি। তবে আজকের দিনের তিক্ততার প্রয়োজন ছিলো। ১৯৪৮ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের পর একটি কুখ্যাত ভুল শিরোনাম ‘ডিউই ডিফিটস ট্রুমান’এর উল্লেখ করে ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ল্যারি স্যাবাতো বলেন, আজকেরটাও এরই ধারাবাহিকতা।