আসাদুজ্জামান: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে মধ্যযুগীয় কায়দায় এক গৃহবধূকে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি ও সাবল দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত গৃহবধূর ছোট ভাই লাভলু মোল্য বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কালিগঞ্জ থানায় গৃহবধূর স্বামী অহিদুল্লাহ গাজীসহ তার পরিবারের ৭ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ শনিবার রাতেই দুই জনকে আটক করেছে।
আহত গৃহবধূর নাম মাহফুজা খাতুন (৩০)। সে শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাজিপুর গ্রামের আব্দুল গফফারের মেয়ে ও কালিগঞ্জ উপজেলার আড়ংগাছা গ্রামের অহিদুল্লাহ গাজীর স্ত্রী। পুলিশ আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেছেন। আাটককৃতরা হলেন, আহত গৃহবধূর ননদ মাছুমা বেগম (৩০) ও ভাশুরের স্ত্রী মোছা: মর্জিনা বেগম (২৫)। আহত গৃহবধূ মাহফুজা খাতুনের বড় ভাই বাবলুর রহমান মোল্যা জানান, গত ১৪ বছর আগে (২০০৪ সালে) আমার বোনের সাথে কালিগঞ্জ উপজেলার আড়ংগাছা গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহ গাজীর ছেলে অহিদুল্লাহ গাজীর ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। এর পর তাদেও ঘরে দুটি কন্যা সন্তানে জন্ম হয়। তারা হল, তাহশিয়া খাতুন (১২) ও তুন্নি খাতুন (৮)। তিনি জানান, সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে তাদের স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ চলছিলো। এর জের ধরে আমার বোন মাহফুজা আমাদের বাড়ি শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাজিপুর গ্রামে চলে আসে। এক সুযোগে তার স্বামী অহিদুল্লাহ আমার বোনকে একটি ভুয়া তালাক দেয় এবং তার বড় মেয়ে তাওছিয়া খাতুনকে ঘরে আটকে রাখে। এ খবর জানতে পেরে সে তার মেয়েকে দেখতে ও তালাকের বিষয়টি জানতে শনিবার বিকেলে শ্বশুর বাড়িতে যায় । এ সময় তার স্বমী অহিদুলসহ তার পরিবারের সকলেই মিলে তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছের সাথে বেধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করে। ব্যাপক মারধরের এক পর্যায়ে মাহফুজা নিহত হয়েছে মনে করে তারা পরিবারের সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে তারা এসে তাকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। বর্তমানে সে সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ ব্যাপারে কালিগজ্ঞ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুবির দত্ত জানান, এ ঘটনা শুনার সাথে সাথেই আমরা সেখানে গিয়ে আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করি এবং এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই জনকে আটক করি। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় গৃহবধুর ছোট ভাই লাভলু মোল্লা বাদী হয়ে তার স্বামী অহিদুলসহ তার পরিবারের ৭ জনের নামে থানায় একটি মামলা দায়ের করে ।