নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ কালিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা সোলাইমান হত্যা মামলার সাক্ষী ইউপি সদস্য ফারুক হোসেনকে সিআইডি গ্রেফতার করেছে। তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা শহরের পাকাপুলের উপর থেকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ,মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডির(অর্গানাইজ) উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবীর মামলার অন্যতম এজাহারভুক্ত আসামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে এ গ্রেফতার করে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ফারুক হোসেন (৩৫) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বসুখালি গ্রামের অমেদ আলীর ছেলে, শোভনালী ইউপি’র ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য ও শোভনালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। মামলার বিবরণে জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঝায়ামারি গ্রামের সোলাইমান গাজীর সঙ্গে একই এলাকার তালেব পেয়াদার ছেলে ওহাব আলী পেয়াদাও তার ভাইদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে গত বছরের ১৯ নভেম্বর দিবাগত রাত ৮টার দিকে সন্নাসীর চকের সাহেব আলীর চায়ের দোকান থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে রাতের কোন এক সময়ে আশাশুনি উপজেলার কৈখালি গ্রামের ভবতোষ মণ্ডলের বাড়ির সামনে সোলায়মানকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সামিউল্লাহ গাজী বাদি হয়ে ওহাব আলী পেয়াদাসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে পরদিন আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। রাতেই আমিরুল ইসলাম নামের এক আসামীকে গ্রেফতার করে। এ মামলায় এজাহারভুক্ত ১০জন আসামী মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের অন্তবর্তীকালিন জামিন পায়। ত৪দের মধ্যে নয়জন ১৪ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে আবেদন করলে সাতজন জামিন লাভ করে। সেলিম পেয়াদা ও জলিল পেয়াদার জামিন না’মঞ্জুর হয়। পরবর্তীতে ২৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তভার আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক নয়ন চৌধুরীর হাত থেকে সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার কালিগঞ্জ উপজেলার সন্নাসীর চক গ্রামের গোলাম মোস্তফা ঢালীর ছেলে আজাহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। রোববার সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম রাজীব রায় এর খাস কামরায় আজাহারুল তার ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে নিজেকে সোলায়মান হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়। এরই সূত্র ধরে রোববার সন্ধ্যায় শহরের পাকাপুলের উপর থেকে গ্রেফতার করা হয় মামলার সাক্ষী ফারুক হোসেনকে। মামলার বাদি সামিউল্লাহ গাজী, নিহতে সোলাইমানের স্ত্রী আয়েশা ও ছেলে শাহীন গাজীর অভিযোগ, মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর গত ১১ জানুয়ারি দুপুর দু’ টোর দিকে সাতক্ষীরা আদালতের সামনে থেকে এজাহারভুক্ত আব্দুর রশীদ তার ভাই শহীদ হোসেন, ইয়াকুব আলী ও জলিল পেয়াদাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন। একইভাবে ওই কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে আসামীদের দারা প্রভাবিত হয়ে তাকে দিয়ে সাক্ষী ফারুকের নাম উল্লেখ করিয়ে পরিকল্পিতভাবে গ্রেফতার করিয়েছেন বলে তাদের অভিযোগ। তারা ফারুেক হোসেনকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডির(অর্গানাইজ) উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবীর বলেন, গ্রেফতারকৃত আজাহারুলের জবানবন্দিতে পাওয়া তথ্য যাঁচাই বাছাই করে ফারুক হোসেনকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার আদালতে সাত দিনের রিমাণ্ড আবেদন জাানানো হবে। তবে গত ১১ জানুয়ারি এ মামলায় আটককৃত চারজন হাইকোর্টের জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখানোয় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।