ডেস্ক রিপোর্ট : কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রত্যাশীদের আন্দোলনের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিদের জন্য বিশেষ কোটা ব্যবস্থা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এই কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তবে তারা অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেয়। আন্দোলনকারীদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ তবে কোটা সংস্কারকারীদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জনসভায় বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের জন্যই আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি এ কথা ভুললে চলবে না। তাদের ছেলেমেয়ে, নাতি-পুতি পর্যন্ত যাতে চাকরি পায় তার জন্য কোটার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আর যদি কোটায় না পাওয়া যায়, সেটা শিথিল করা আছে, যেখানে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের চাকরি দেওয়া যাবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আমাদের এ বিশেষ ব্যবস্থা করতেই হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীদের অনেকেই হতাশ হয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে লাভ হবে না বলে মন্তব্য করে। আবার অনেকেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে হাসান আল মামুন বলেন, আমাদের দাবি সার্বিক কোটার সংস্কার। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবিগুলো মেনে নিবেন। আমরা অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাব। শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে -কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ ভাগ থেকে ১০ ভাগে নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য থাকা পদগুলোয় মেধায় নিয়োগ দেওয়া, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণ করা এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা। গত ১৪ মার্চ আন্দোলনকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার জন্য একটি মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের সামনে এলে পুলিশ তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে। এতে ১৫ থেকে ২০ আন্দোলনকারী আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। ওই পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আগামী ২৫ মার্চ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান করা হবে। এদিন শিক্ষা সনদ গলায় দিয়ে শাহবাগ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত ঝাড়ু হাতে নিয়ে এই অভিযানে যোগ দিবে আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া ২৯ মার্চ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিকেল ৪টায় নাগরিক সমাবেশ করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।