আন্তর্জাতিক

ফ্রান্সে জিম্মি সংকটের অবসান, বন্দুকধারীসহ নিহত ৩, আহত ১২

By Daily Satkhira

March 24, 2018

পুলিশের গুলিতে হামলাকারীর নিহতের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ত্রেবেসের সুপারমার্কেটে ‘জিম্মি’ সংকটের অবসান ঘটেছে। এতে হামলাকারী সহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। আর পুলিশসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।

প্রাথমিকভাবে হামলাকারীর বিস্তারিত তথ্য বা কোনো ছবি পাওয়া যায়নি। হামলাকারী মরোক্কোর নাগরিক বলে ধারণা করছে পুলিশ। এছাড়া তিনি ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার ‘তালিকাভুক্ত’ ছিলেন বলেও জানা গেছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১টার পর পার্বত্য শহর কারাকাসোনের অদূরে ছোট্ট শহর ত্রেবেসের ‘সুপার-ইউ’ নামে মার্কেটটিতে এ হামলা চালানো হয়। এরপর দুপুর পৌনে ২টা নাগাদ পুলিশের পাল্টা হামলায় হামলাকারী নিহত হয়।

বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত দু জন নিহত হয়েছে। তবে কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যম তিনজন নিহত হওয়ার খবর দিচ্ছে।

জানা গেছে, ভারী অস্ত্র ও গ্রেনেড নিয়ে হামলাকারী ওই সুপার মার্কেটে প্রবেশ করে বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ট্রিবিসের ইউ সুপারশপের হামলাকারীকে নিরস্ত্র করেছে ফ্রান্সের কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশ। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমটিকে সেখানে নিহতের সংখ্যা দুইজন বলে জানিয়েছেন।

লোকাল ফ্রান্সের খবরে বলা হয়েছে, পুলিশের গুলিতে সুপারশপে হামলাকারীও নিহত হয়েছেন। সেখানে আহত হয়েছেন আরও তিনজন। সংবাদ মাধ্যমটি বলছে হামলাকারীকে মরোক্কো বংশদ্ভূত ফরাসি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। উগ্রবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হওয়ায় পুলিশের তালিকায় ছিল সে।

সংবাদ মাধ্যমটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে কারকাসানো শহরে ড্রাইভারকে আঘাত করে একটি গাড়ি ছিনতাই করে ওই হামলাকারী। পরে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে ট্রিবিস শহরের ওই সুপারশপে ঢুকে পড়ে।

সে সময়ে ওই সুপার শপে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী ফ্রান্স ইনফোকে জানিয়েছেন, এক লোক চিৎকার করছিল আর গুলি করা শুরু করলো। আমি হিমাগারের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে সেখানে ঢুকে পড়ি। আমরা অন্তত দশজন সেখানে এক ঘণ্টা আটকে ছিলাম। পরে পিছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে আসি। ফরাসি সংবাদপত্র লা দেপেচে দু মিদির খবরে বলা হয়েছে, আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী সশস্ত্র হামলাকারীর সঙ্গে এক বা একাধিক গ্রেনেড ছিল। আর তিনি ‘সিরিয়ার প্রতিশোধ’ চান বলে চিৎকার করেছেন।

বেলা দুইটার দিকে ওই হামলাকারীকে নিরস্ত্র করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরে তার গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে হামলাকারীর মাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে এসেছে পুলিশ।

দেশটির কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, এই হামলায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সশ্রস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস জড়িত বলে ধারণা করছেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হামলাকারী নিজেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুগত বলে চিৎকার করছে ও ‘সিরিয়ায় হামলার প্রতিশোধ’ বলে স্লোগান দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্যারিসের এক সুপার মার্কেটে জঙ্গি হামলায় চারজন নিহত হয়েছিল। সে বছরের নভেম্বরে প্যারিসে এক হামলায় ১৩০ জন নিহত হলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। যা গত বছরের অক্টোবরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ওই মাসেই ফ্রান্সের বন্দর নগরী মার্সেইর রেলস্টেশনে ছুরি হাতে ৩০ বছর বয়সী এক আফ্রিকান নাগরিক হামলা চালালে দুই নারী নিহত হয়। জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস ওই হামলাকারীকে নিজেদের সদস্য বলে দাবি করে।