ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ফিলিস্তিনের গাজায় নিহতের ঘটনায় ‘স্বাধীন ও নিরপেক্ষ’ তদন্তের প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কুয়েতের উত্থাপিত প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র এ ভেটো দেয়।
দখল করা ভূখণ্ডে অধিকার ফিরে পেতে গত শুক্রবার ছয় সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে ফিলিস্তিনিরা। প্রথম দিন ইসরায়েলের হামলায় ১৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। আহত হয় দেড় হাজারের বেশি মানুষ, যাদের ৭৫৮ জন আহত হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে।
নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের এ সহিংসতার বিরুদ্ধে ‘স্বাধীন ও নিরপেক্ষ’ তদন্তের দাবিতে গত শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে কুয়েত। পরদিন শনিবার পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের প্রত্যেকেরই ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। ইসরায়েলকে বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র গত শনিবার সেই ক্ষমতার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে।
কুয়েতের প্রস্তাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তদন্ত করার পাশাপাশি ইসরায়েল-গাজা সীমান্তের পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ফিলিস্তিনিদের ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকারের’ কথা উল্লেখ করা হয় এবং ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করা হয়। এসবের পাশাপাশি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ইসরায়েলের আচরণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের ক্ষোভ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশের মধ্যে ইসরায়েল-গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের কর্মসূচি অব্যাহত আছে। তবে প্রথম দুই দিনের তুলনায় গত রবিবার সীমান্তে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। গত শুক্রবার নিহত ১৬ ফিলিস্তিনির দাফনে হাজার হাজার মানুষ যোগ দিতে যাওয়ায় মূল বিক্ষোভে লোকসমাগম খানিকটা কম হয়।
নিহতদের মধ্যে পাঁচজন গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের সশস্ত্র শাখার সদস্য ছিল বলে জানিয়েছে হামাস। ‘প্রত্যাবর্তনের মহান যাত্রা’ শিরোনামের ছয় সপ্তাহব্যাপী ওই কর্মসূচিতে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি হামাসের সশস্ত্র শাখার ওই সদস্যরাও যোগ দেয়।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গত শনিবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১০ জন হামাসের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ জড়িত ছিল বলে তাদের কাছে রেকর্ড আছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর সময় তাদের হত্যা করা হয় বলে ইসরায়েলের দাবি।