মানুষ পৃথিবীর বড় বড় হিংস্র প্রাণীকে অনেক সময় ভয় পান না। কিন্তু অতি ক্ষুদ্র প্রাণী মশার ভয়ে মশারি নাম খাঁচায় বন্দি করে রাখে নিজেকে। এটা আসলে ভয়ে বলা যাবে না মানুষ মশার কামড়ে অতিষ্ট হয়েই এমনটি করেন।
সম্প্রতি মশার কামড়ে অতিষ্ট হয়ে চীন সরকার শেষ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মশা মারার নির্দেশ দিয়েছে। অনেকেই ভাবছেন এটা মিথ্যা খবর বা গল্প, কিন্তু না এটা বাস্তব।
এই কাজে চীন সরকারের হাতে থাকা আধুনিক রাডার প্রযুক্তি নিয়োগ করা হয়েছে। এই রাডার দীর্ঘ দুই কিলোমিটার এলাকার মধ্যে থাকা যে কোনো মশাকে শনাক্ত করতে এবং তা লেজার প্রযুক্তির মাধ্যমে মেরে ফেলতে পারে।
মশা হেলাফেলা করার মতো কোনো প্রাণী না। মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর মতো রোগে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। এ কারণেই হয়তো মশা নিধনে সর্বাধুনিক রাডার বসিয়েছে চীন।
শত্রু পক্ষের ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্নিত করতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, অনেকটা সে প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এবার মশার বংশ ধ্বংস করতে চায় দেশটি।
বেইজিং ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ডিফেন্স ল্যাবরেটরিতে তৈরি হচ্ছে এ রাডার। আপাতত যন্ত্রটির প্রোটোটাইপ তৈরি হয়েছে। আশপাশের দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে একটি মশাও খুঁজে পেলে এ রাডার তা জানিয়ে দেবে।
এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা জানান, সাফল্য পেলে মানবজাতির পক্ষে আশীর্বাদ হয়ে উঠবে এ যন্ত্র। কী কাজ করবে এ যন্ত্র?
উত্তরে ওই কর্মকর্তা জানান, এ যন্ত্র থেকে এক ধরনের তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ বেরোবে যা আশপাশের দুই কিলোমিটার পর্যন্ত মশাদের খুঁটিনাটি চরিত্রও জানিয়ে দেবে কন্ট্রোল রুমে বসে থাকা বিজ্ঞানীদের। ওই মশাটি কোন জাতের, মশাটির লিঙ্গ, মশাটি কত জোরে উড়ছে কিংবা কোনদিকে উড়ে যাচ্ছে- এসবই ল্যাবে বসে জানা যাবে। এরপরই মশাটি নিধন করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এ প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে দুটি রাডার নির্মিত হলেও ভবিষ্যতে আরো কয়েকটি রাডার বানানোর পরিকল্পনা করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।
এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের দাবি করেন- প্রত্যেক বছর মশার কামড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা যায়। আধুনিক সভ্যতা ও পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে তাই এবার মশার বংশ নিধন করতে উদ্যোগ নিয়েছে চীন সরকার।