শ্যামনগর

উপকূলে অনাবৃষ্টি; ফসল সংকটের আশংখা কৃষকের

By daily satkhira

April 02, 2018

গাজী আল ইমরান, শ্যামনগর: শ্যামনগর উপজেলার ধুমঘাট গ্রামের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে অনাবৃষ্টি ও উপকূলীয় কৃষি সংকট বিষয়ে নেওয়া তথ্যমতে অনাবৃষ্টির কারনে মাঠে পুড়ছে বোরো ধান । ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে মাঠ। ক্ষরার ফলে অধিক হারে বেড়েছে লবনাক্ততা। একই জমিতে একপাশে ধানের অবস্থা ভালো দেখলেও অন্যপাশে লবন ওঠার কারনে ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। মিষ্টি পানির আধার না থাকায় কৃষকরা ঝুঁকেছে স্যালোর পানির দিকে। তাতেও ভালো ফল পাচ্ছেনা কৃষকরা। অন্যবারের চেয়ে অধিক হারে খরচ বেড়েছে কৃষকদের। স্যালো দিয়ে পানি তোলার কারনে জ্বালানী খরচ লেগেছে দিগুন। আর কিটনাশকের খরচ তো বলার অপেক্ষা রাখেনা। অনাবৃষ্টির কারনে আমের মুকুল,কাঠালের ফুল,আমড়া, লেবুর ফুল শুকিয়ে পড়ে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় কৃষক সামসুর রহমান। তিনি বলেন ,অন্যান্য বছর গুলোতে এসময় বর্ষার দেখা মিললেও এ বছর বৃষ্টির ফোটা চোখে পড়েনি।ফষলের পাশাপাশি গবাদি পশু বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এমনকি মারাও যাচ্ছে বলে জানা যায়। তাছাড়া বর্ষা না হওয়া এবং তাপের কারনে লবন কেটে উঠছে বলে তিনি জানান। চারদিকে লোনা পানির কারনে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু পানির সংকটে ভূগছে বলে ভিন্ন সুরে জানান সামসুর রহমান। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ বািড়তে সবজি ক্ষেত শুকিযে তামাক হয়ে গেছে প্রায়। জমিতে পানির অভাবে একেবারেই হাড় উঠে গেছে লক্ষ করা যায়। অনাবৃষ্টি নিয়ে কথা বলতে গেলে , চরারচকের কৃষক গনেশ মন্ডল বলেন, একেবারে সব শেষ হয়ে গেছে। গত বছর আড়াই বিঘা জমিতে ৮ হাজার টাকা খরচ হলেও এবছর ১৫০০০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গনেশ মন্ডল আক্ষেপের সাথে বলেন, বর্ষা না হওযার কারনে আমাদের অনেক দূর থেকে পানি আনতে হচ্ছে। অথচ আমাদের জমির পাশেই পানি থাকলেও আমরা সেটা ব্যবহার করেতে পারছিনা। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,কয়েকজন মানুষ খালে লোনা পানি তোলার কারনে সেটা ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে উঠেছে। এটা আমাদের মরার উপর খাড়ার বাড়ি দেওয়ার মত। অনাবৃষ্টির কারনে আগামী বছর গুলোতে বোরো ধানের চাষ কমিয়ে আনবে বলে চিন্তা করছে এখানকার কৃষকরা।কারন হিসাবে, চলতি মৌসুমে বিঘা প্রতি অধিকহারে খরচ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছের তিনি।এ বিষয়ে আক্ষেপের সুরে স্থানীয় কৃষক বাবু গায়েন বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর যে হারে খরচ বেড়েছে তাতে করে আগামী মৌসুমে বোরো ধান চাষ করবো কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছি।গত বছর চৈত্র্যর মাঝামাঝি সময়ে বর্ষা হলেও এ বছর বর্ষার দেখা মেলেনি। বর্ষা না হওযার কারনে এবারের মৌসুমে তেল খরচ বেশি ,কিটনাশক,শ্রম সবকিছুই বেশী লেগেছে। বিশেষ করে পানির জোগান দিতে নারীদেরকেও মাঠে কাজের সহযোগী হিসাবে বেশ সময় ব্যয় করতে হচ্ছে বলে তিনি জানান। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হোসেন মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বর্ষা না হওয়ায় অবশ্যই মাঠে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে। অন্যবার এমন সময়ে বর্ষা হলেও এবার তা হয়নি ফলে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে। মাঠে লবনাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। কয়েক বছর পূর্বে সরকারি ভাবে ভর্তুকি দিয়ে কৃষককে ডিজেলের ব্যবস্থা থাকলেও এখন আর সে ব্যবস্থা নেই ফলে কৃষক বোরো চাষে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আমাদের চালের বড় জোগান আসে বোরো মৌসুমে। তাই সরকারের উচিত বোরো ধান চাষের প্রতি কৃষকদের উৎসাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া। তাহলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। এমনটি আশা এখানকার স্থানীয় কৃষকদের।