ফিচার

ছাত্রলীগ নেতার কাণ্ড!

By Daily Satkhira

April 03, 2018

ভোলার মনপুরায় উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনাম হাওলাদারের বিরুদ্ধে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে লাইব্রেরিতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নে একটি বিদ্যালয়ে ঘটনা ঘটে।

এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতা এনাম হাওলাদার ওই স্কুলের চিলেকোঠা দখল করে গত দেড় বছর অবস্থান করছে বলে জানান স্কুলের শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার। বর্তমানে ছাত্রলীগ নেতার ভয়ে শিক্ষিকা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

সোমবার অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার বিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানা প্রশাসন, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা।

এর আগে রোববার এই ঘটনায় ওই শিক্ষিকা অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও ইউপি চেয়ারম্যান কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারী শিক্ষিকা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় স্কুলের লাইব্রেরিতে অবস্থান করছিলেন। এই সময় ছাত্রলীগ নেতা এনাম হাওলাদার বিস্কুট নেয়ার কথা বলে লাইব্রেরিতে ঢুকে কুপ্রস্তাব দেয়। পরে লাইব্রেরি থেকে চলে যেতে বললে ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।

পরে ছাত্রলীগ নেতাকে ঝাপটা দিয়ে ফেলে দিয়ে বের হয়ে নিচে এসে দেখি গেটে তালা মারা। পরে কান্নাকাটির শব্দ শুনে এলাকার একজন বৃদ্ধ এসে উদ্ধার করে। তখন ওই ছাত্রলীগ নেতা এই ঘটনার কথা বলতে নিষেধ করেন। এমনকি মেরে ফেলার হুমকি দেন।

এই ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা এনাম হাওলাদারের মোবাইলফোন গত দুই দিন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে ছাত্রলীগ নেতার বাবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর মেম্বার জানান, কথা কাটাকাটি হয়েছে অন্য কিছুই না। আমি বিষয়টি সুরাহা করে দিবো বলে শিক্ষিকাকে বলেছি। তবে তিনি স্কুল দখল করে অবস্থান নেয়ার ব্যাপারটি এড়িয়ে যান।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুদ্দিন সাগর জানান, ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারী শিক্ষিকার স্বামী জানান, ছাত্রলীগ নেতার হুমকিতে তার স্ত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। তিনি এই ঘটনার বিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা অফিসারসহ সকল দফতরে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মনোয়ারা বেগম জানান, এই ঘটনা শিক্ষক সমাজ মর্মাহত। আমরা এই ঘটনায় বিচারের দাবিতে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার ওসি, শিক্ষা অফিসে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।

এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান জানান, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ছাত্রলীগ নেতার কাছ থেকে স্কুল দখলমুক্ত করতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল আজিজ ভূঁঞা যুগান্তরকে জানান, শিক্ষিকার লিখিত অভিযোগ ও শিক্ষক নেতাদের স্মারকলিপি পাওয়ার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিতভাবে মনপুরা থানাকে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনপুরা থানার ওসি শাহীন খান জানান, ঘটনাটি শিক্ষিকার কাছ থেকে মৌখিক শুনেছি। এছাড়াও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিখিতভাবে জানিয়েছেন। শিক্ষিকার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।