অনলাইন ডেস্ক: সাতক্ষীরার ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু, জেলা পরিষদ সদস্য আল ফেরদৌস আলফা, বৈকারী ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ওরফে আলসে, আলীপুরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রউফ, ভোমরা ইউপি চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী এবং সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামসহ সারা দেশে ৬২০ চোরাকারবারি, মুদ্রা পাচারকারী ও হুন্ডি ব্যবসায়ীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়াও শুরু হয়েছে। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান চালানো হবে। এসব অপরাধীর মধ্যে চক্রের প্রধান বা মূল হোতা ৭৫ জন। বাকিরা সদস্য।
চক্রের মূল হোতা বা সদস্যদের মধ্যে আছেন কতিপয় রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, পুলিশ সদস্য, ব্যাংক কর্মকর্তা, কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা, সিএন্ডএফ এজেন্ট এবং ইমিগ্রেশনের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী। অপরাধীরা এজেন্ট এবং সাব-এজেন্টের মাধ্যমে টাকা ও বিদেশি মুদ্রা ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করছে। ওই টাকার একটি বড় অংশ দিয়ে কেনা হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক। আর এসব অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে চলে গিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের অভিমত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা সারা দেশে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে চোরাকারবারি, মুদ্রা পাচারকারী ও হুন্ডি ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রস্তুত করেছে। সেই তালিকা জমা পড়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তালিকাটি দেয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সেটি গত সপ্তাহে যায় পুলিশ সদর দফতরে। এরপর তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা পুলিশ সদর দফতরকে অবগত করতে বৃহস্পতিবার সারা দেশের এসপিদের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে তাদের তালিকাও যুক্ত করে দেয়া হয়েছে চিঠিতে।
তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চোরাকারবারি, হুন্ডি ব্যবসায়ী ও মুদ্রা পাচারকারী চক্রের সদস্যরা চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। এই বিভাগে তাদের সংখ্যা ১৬৭ জন। তাদের মধ্যে কক্সবাজার জেলায়ই আছে ৬১ জন। সিলেট বিভাগে তাদের তৎপরতা সবচেয়ে কম। এই বিভাগে তাদের সংখ্যা ৪২ জন। তাছাড়া ঢাকা বিভাগে (ময়মনসিংহসহ) ৮২, রাজশাহীতে ৯২, রংপুরে ৮১, বরিশালে ৪৭ এবং খুলনা বিভাগে এ চক্রের ১০৯ জন গডফাদার বা সিন্ডিকেট সদস্য সক্রিয় আছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী সাতক্ষীরার মূল হোতারা হলেন- ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য আল ফেরদৌস আলফা, বৈকারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ওরফে আলসে, আলীপুরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রউফ, ভোমরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী এবং সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি সহেলী ফেরদৌস শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত জানি না। খোঁজ নিয়ে বলতে হবে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে যদি তালিকা এসে থাকে তবে নিশ্চয়ই সে অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর।