জি.এম আবুল হোসাইন : সোনারডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরকারি ভাবে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে বিদ্যালয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাজেটের অর্থের টাকা থেকে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর ইসলামের বিরুদ্ধে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সদর উপজেলার ৫নং শিবপুর ইউনিয়নের সোনারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাজেটের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ১ লক্ষ বরাদ্ধ দেওয়া হয়। কিন্তু এবরাদ্ধ থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৌশলে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে দায় সারাভাবে কাজ করেছেন। বিদ্যালয়ের তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম ছরোয়ার ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য গৌতম কুমার জানান, একাজের মধ্যে রয়েছে স্কুলের প্রাচীর নির্মাণ, তিনটি টয়লেট নির্মাণ, স্কুলের বিল্ডিং রং করা, ফ্যান ক্রয় সহ রাস্তার সোলিং তৈরি প্রভৃতি। এর মধ্যে স্কুলের প্রাচীর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাচীর নির্মাণের সময় প্রত্যক্ষদর্শী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একাধিক ব্যক্তি জানান, নিম্ন মানের ইট-খোঁয়া দিয়ে রড ছাড়াই প্রাচীরের লিন্টন ঢালাই দেয়া হয়। প্রাচীরের সম্মুখে ছোট ছোট ৪টি রড গুঁজে দিয়েছেন মাত্র। উপজেলা শিক্ষা অফিসের তদারকির অভাবে কৌশলে তিনি এসব নির্মাণ ও সংস্কারের নামে তিনি বিপুল অর্থ আত্মসাত করেছেন বলে একাধিক ব্যক্তি জানান। আর এ সকল কাজে সহযোগিতা করেছেন সোনারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম ছরোয়ার ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য গৌতম কুমার। এ প্রসংগে তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম ছরোয়ার বলেন, বরাদ্দকৃত টাকা সঠিক ভাবে খরচ করা হয়েছে। এছাড়া প্রাচীরে ৩৭কেজি রড দিয়ে লিন্টন ঢালাই দেয়া হয়েছে। প্রাচীরটি হেলে পড়ার কারণে কোন দূর্ঘটনা হতে পারে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা ভূল দেখেছেন, সেটি হেলে পড়েনি। আর সেজন্য দূর্ঘটনা ঘটার কোন সম্ভাবনা নেই। বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক বিদ্যোৎসাহী সদস্য গৌতম কুমারও একই মন্তব্য করেন। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নুর ইসলামের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে বিদ্যালয়ের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে কোন বরাদ্দ ছিল না। স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক নিজেদের ব্যক্তিগত অর্থে এসব কাজ করা হয়েছে। এসকল কাজের জন্য ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে বিদ্যালয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাজেটের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ১ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ ছিল কি-না এমন প্রশ্ন করা হলে, তিন প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে তিনি তা স্বীকার করেন। এছাড়া তিনি বিদ্যালয়ের ক্যাশবুক সহ বিভিন্ন বিল ভাউচার দেখান। যেখানে ১ লক্ষ টাকা খরচের হিসাব পরিলক্ষিত হয়। প্রাচীর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোট ছোট ৪টি রড গুঁজে দেয়া হয়েছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পর্যাপ্ত ইট ও রড দিয়েই নিয়ম অনুযায়ী এটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি হেলে পড়তেও পারে। এতে সাংবাদিকদের অসুবিধা কী ? এবিষয়ে শিবপুর ইউপি’র ৬নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নিম্ন মানের ইট-খোঁয়া দিয়ে রড ছাড়াই প্রাচীরের লিন্টন ঢালাই দেয়ার বিষয়টি প্রতক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আমি উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ সত্য প্রমানিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। সোনারডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে বরাদ্ধের টাকা আত্মসাত এবং প্রাচীর নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসি।