সময় খুব মূল্যবান বিষয় যেকোনো মানুষের ক্ষেত্রে। আর শিশুর জন্য বিষয়টি আরো গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সঠিক ব্যবহার না হলে একদিকে শিশুর যেমন শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি হবে না, তেমনি অসুস্থ শিশু পারিবারিক অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় কোনো উন্নয়ন করতে পারবে না। এখনকার অনেক শিশুকেই দেখা যায়, টেলিভিশনের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত হতে। এ অভ্যাস শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
অতিরিক্ত টেলিভিশন শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি কী করে :
১. অতিরিক্ত টেলিভিশন শিশুকে আত্মকেন্দ্রিক, অসহনশীল ও অসামাজিক করে।
২. শিশুর বুদ্ধির বিকাশে বাধা দিয়ে সৃষ্টিশীলতা নষ্ট করে দেয়।
৩. শিশুর শারীরিক খেলাধুলার সময় কেড়ে নেয়। এতে শিশুরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
৪. শিশুর শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে দেয়। এতে ওজন বাড়ে।
৫. পারিবারিক সদস্যদের মধ্যে বন্ধন কমিয়ে দেয়।
৬. সামাজিক যোগাযোগ কমিয়ে দেয়।
৭. শিশুর স্বাভাবিক আচার-ব্যবহারের ওপর প্রভাব ফেলে।
৮. শিশুর মাথাব্যথা, চোখব্যথা, চোখ দিয়ে পানি পড়াসহ চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে।
৯. শিশুকে ধূমপান, মদ্যপানসহ মাদকে আসক্ত করে।
১০. অতিরিক্ত টেলিভিশন শিশুর ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোকসহ নানা জটিলতা বাড়ায়।
প্রতিকার
১. শিশুরা অনুকরণপ্রিয়, তাই আপনাকে আগে টিভি দেখা কমাতে হবে এবং অতিরিক্ত টিভি দেখার কুফল শিশুকে বোঝাতে হবে।
২. শিশুকে প্রতিদিন আধঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার বেশি টিভি দেখতে দেবেন না।
৩. শিশুর ঘুমানোর ঘরে টিভি রাখবেন না।
৪. শিশুর খাওয়ার সময় টিভি দেখাতে দেখাতে শিশুকে খাবার খাওয়াবেন না।
৫. টিভির বিকল্প বিনোদনের ব্যবস্থা করুন। শিশুর জন্য যাতে টিভির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি কমে।
৬. সপ্তাহে একদিন শিশুকে টিভি দেখা থেকে বিরত রাখুন।
৭. বাসার পড়াশোনা বা হাতের কাজ করার সময় শিশুকে টিভি দেখতে দেবেন না।
৮. মা-বাবা সবাই ব্যস্ত, শিশুটি তাদের কাজে বিঘ্ন বা জ্বালাতন করছে, এ অবস্থায়ও শিশুদের টিভি দেখাতে বসিয়ে এ বিষয়ে আসক্ত করবেন না।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।