দুধ কাঁচা খাওয়া ভাল নাকি ফুটিয়ে খাওয়া ভাল, এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। নিজেদের আঙ্গিকে এটিকে ব্যাখ্যাও দিয়ে থাকেন। যে যাই বলুক সরাসরি গোয়ালঘর বা খামার থেকে আসা কাঁচা দুধ না ফুটিয়ে খেতে কঠোরভাবেই নিষেধ করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি। ফলে কাঁচা দুধ অবশ্যই ফুটিয়ে খেতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা দুধে অনেকরকম রোগজীবাণু বাসা বাঁধে। সরাসরি খামার থেকে আনা দুধ খেলে সেই জীবাণু শরীরের নানা ক্ষতি করতে পারে। দুধ ফোটালে উচ্চ তাপমাত্রায় সেই সব জীবাণু মরে যায়। এখন আমরা যে প্যাকেটের দুধ কিনি, তা পাস্তুরাইজড।
পানীয় জীবাণুমুক্ত এবং সংরক্ষণের পদ্ধতির নাম পাস্তুরাইজেশন। বিশেষ পদ্ধতিতে উচ্চ তাপমাত্রায় পাস্তরাইজেশন করা হয়। প্যাকেটের দুধও ফুটিয়ে খাওয়াই ভাল, এমনটাও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ পাস্তরাইজেশন পদ্ধতিতে দুধ একশো শতাংশ ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করা সম্ভব হয় না।
নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপকদের কথায়, না ফোটানো দুধে ই-কোলাই, সালমোনেল্লার মতো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। এই ব্যাকটেরিয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমিয়ে দেয়। বিশেষত গর্ভবতী মহিলা, শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে সব সময় দুধ ফুটিয়ে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা।
বায়োটেকনোলজির বিশেষজ্ঞেরা জানান, দেখা গেছে কাঁচা দুধ তো বটেই, এমনকি পাস্তরাইজড দুধেও নানা রকম মাইক্রোব্যাকটেরিয়া জন্মায়। তাদের মধ্যে রয়েছে, সিউডোমোনাস (৬৪-৫৩.৮ শতাংশ), মাইক্রোকক্কাস (৮.২ শতাংশ), এনটারোব্যাকটর (৯.৮ থেকে ২.৬ শতাংশ), ব্যাসিলাস (৬.৬ থেকে ২.৬ শতাংশ), ফ্ল্যাভোব্যাকটর (১.৬ থেকে ১.৩ শতাংশ)।
জাপানের ওহিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জানাচ্ছেন, পাস্তরাইজেশন পদ্ধতিতে দুধ জীবানুমুক্ত করতে গিয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় ফোটানো হয়, ফলে দুধের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। তাই বর্তমানে, এই পদ্ধতিতে দুধ একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ফোটানো হয় এবং ধীরে ধীরে সেটাকে ঠাণ্ডা হতে দেওয়া হয়।
তাই গবেষকদের মত, প্যাকেট দুধ দোকান থেকে কিনে এনে কিছু সময় হলেও সেটাকে ফোটান। যদি কোনও জীবাণু থেকেও থাকে, ফোটালে সেই সম্ভাবনা দূর হবে।