নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পেতে স্বামী ও ননদের নামে আদালতে মামলা দায়ের করায় সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের এক গৃহবধূ ও তার বাবার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ খাদিজা খাতুন বৈকারী গ্রামে বাবা আব্দুর রশিদ মোল্যার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, সদর উপজেলার কালিয়ানি ছয়ঘরিয়া এলাকার মৃত মোছেল উদ্দীন সরদারের ছেলে এশারুল ইসলামের সাথে ১৯৯৫ সালের ৫ ডিসেম্বর বৈকারী গ্রামের আব্দুর রশিদ মোল্যার মেয়ে খাদিজা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় এশারুল শ্বশুর বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে নগদ ৫০ হাজার টাকাসহ এক লাখ টাকার মালামাল যৌতুক হিসেবে গ্রহণ করে। দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে তাদের সোনালী খাতুন (১৪) নামের একটি মেয়ে ও সাবির হোসেন (২) নামের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী এশারুল যৌতুকের দাবিতে প্রতিনিয়ত খাদিজার উপর শারীরিক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায় এশারুলের বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিমাংসা করে দেন। এরপর শান্তিতে ঘরসংসার করার একপর্যায় গত ১২ই জুলাই এশারুল তার বোন রোমেছা খাতুনের পরামর্শে ব্যবসার জন্য বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা আনতে স্ত্রীর উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেন। খাদিজা বিষয়টি তার মাকে জানালে ওই দিনই তিনি ছয়ঘরিয়া গ্রামে জামাতার বাড়িতে আসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মায়ের সামনে এশারুল তার স্ত্রীর মাথায় ও হাতের কব্জিতে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনায় পুলিশ থানায় মামলা নিতে অস্বীকার করায় খাদিজা নিজে বাদী হয়ে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্বামী এশারুল ও তার বোন রোমেছার নামে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। আদালত বাদির অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। নির্যাতিত গৃহবধু খাদিজা খাতুন জানান, থানায় মামলা রেকর্ড হওয়ার পর তার স্বামী এশারুল ও তার লোকজন বাবার বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে এ মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি প্রদান করছে ও তার বাবা ও ভাইদের বিভিন্ন মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তবে, গৃহবধূর স্বামী এশারুল তার স্ত্রীকে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ২/৩ দিন আগে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবি এড. নুরুল আমিন জানান, কাগজ কলমে মামলাটি এখনও মীমাংসা হয়নি। তবে মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য বাদীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে।