জাতীয়

২০তম অধিবেশনে যাননি ৩৫ এমপি

By Daily Satkhira

April 19, 2018

* সংসদবিমুখ এমপিরা * গড়ে উপস্থিত ছিলেন ২৭৯ এমপি * অধিবেশন শুরুর দিন সর্বোচ্চ আর শেষের দিন সর্বনিম্ন উপস্থিতি

জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনে ৩৫ জন এমপি সংসদে যাননি। ৮ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ৫ কার্যদিবস চলা ওই অধিবেশনে গড়ে ২৭৯ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশন শুরুর দিন সর্বোচ্চ ২৫৪ জন এমপি সংসদে উপস্থিত ছিলেন। আর সর্বনিম্ন ১৯৬ জন উপস্থিত ছিলেন শেষের দিন। এছাড়া ৩৫ কার্যদিবসের দীর্ঘ ১৯তম অধিবেশনেও যেতে পারেননি ১১ জন এমপি।

সংসদে এমপিদের লবিতে রাখা ডিজিটাল হাজিরা বই থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।

২০তম অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ২৮ এমপি অনুপস্থিত ছিলেন। দলটির ভিআইপিদের মধ্যে এই তালিকায় জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-১), শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু (ঝালকাঠি-২), সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীও (ফরিদপুর-২) রয়েছেন।

আর জাতীয় পার্টির অনুপস্থিত ছিলেন ৫ জন এমপি। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাও ছিলেন। এছাড়া একজন স্বতন্ত্র এমপিও অনুপস্থিত ছিলেন। আর খুনের মামলার আসামি হয়ে জেলে থাকায় সংসদে যেতে পারেননি আমানুর রহমান খান রানা (টাংগাইল-৩)।

অধিবেশনের শেষ দিন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এবং বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এদিন সর্বনিম্ন উপস্থিতি এমপিদের সংসদ বিমুখতার প্রমাণ করে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।

এমপিদের এই অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদ নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংসদের অধিবেশনের শেষ দিন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এই অধিবেশনেও তারা বক্তব্য রেখেছেন। অথচ সেই দিন সর্বনিম্ন উপস্থিতি ছিল। এতেই প্রমাণিত হয় এমপিরা সংসদবিমুখ।

২০তম অধিবেশনে যারা যাননি

জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ছাড়াও ২০তম অধিবেশনে আওয়ামী লীগের মো. দবিরুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২), হুইপ ইকবালুর রহিম, (দিনাজপুর-৩), আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), মো. শিবলী সাদিক (দিনাজপুর-৬), মো. ইসরাফিল (নওগাঁ-৬), আ. মজিদ মন্ডল (সিরাজগঞ্জ-৫), ফরহাদ হোসেন (মেহেরপুর-১), শেখ হেলাল উদ্দীন (বাগেরহাট-১), মীর মোস্তফা আহমেদ রবি (সাতক্ষীরা-২), আলী আজম (ভোলা-২), নাজমুল হাসান (কিশোরগঞ্জ-২), সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯), মো. জাহিদ আহসান রাসেল (গাজীপুর-২), সিমিন হোসেন রিমি (গাজীপুর-৪), নিজাম উদ্দিন হাজারী (ফেনী-২), মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী (নোয়াখালী-৪), দিদারুল আলম (চট্টগ্রাম-৪), এম আবদুল লতিফ (চট্টগ্রাম-১১), সাইফুজ্জামান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৩), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (পার্বত্য খাগড়াছড়ি), বেগম মনোয়ারা বেগম (মহিলা আসন-১৭), ফিরোজা বেগম চিনু (মহিলা আসন-৩৩), মিসেস আমিনা আহমেদ (মহিলা আসন ৩৪), বেগম রহিমা আখতার (মহিলা আসন-৩৬) অনুপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মো. মশিউর রহমান রাঙ্গা ছাড়াও এম এ হান্নান (ময়মনসিংহ-৭), লিয়াকত হোসেন খোকা (নারায়ণগঞ্জ-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), সেলিম উদ্দিন (সিলেট-৫) বেগম রওশন আরা মান্নান (মহিলা-৪৭) অনুপস্থিত ছিলেন। আর অনুপস্থিত থাকা স্বতন্ত্র এমপি হলেন তাহজীব আলম সিদ্দীকি (ঝিনাইদহ-২)।

১৯তম অধিবেশনে অনুপস্থিত ১১ এমপি

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি শুরু হওয়া ১৯তম অধিবেশন চলে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ৩৫টি। বছরের দীর্ঘ এই অধিবেশনেও ১১জন এমপি যেতে পারেননি। এই অধিবেশনে গড়ে ১৯৩ জন উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশন শুরুর দিন সর্বোচ্চ ২৫৫ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন। আর ১১ জানুয়ারি সর্বনিম্ন ১৪১ জন উপস্থিত ছিলেন। এ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ৬ জন, জাতীয় পার্টির ৪ জন ও স্বতন্ত্র একজন এমপি অনুপস্থিত ছিলেন।

যারা অনুপস্থিত ছিলেন

এ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), আ. মজিদ মন্ডল (সিরাজগঞ্জ-৫), এস এম মোস্তফা রশিদী (খুলনা-৪), আমানুর রহমান খান রানা (টাংগাইল-৩), সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-১) ও হাজী মো. সেলিম ( ঢাকা-৭) অনুপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির এম এ হান্নান (ময়মনসিংহ-৭), বেগম সালমা ইসলাম ( ঢাকা-১) লিয়াকত হোসেন খোকা (নারায়ণগঞ্জ-৩) এবং এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫) অনুপস্থিত ছিলেন। আর স্বতন্ত্র এমপি উষাতন তালুকদারও এই অধিবেশনে যাননি।

প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের ২৭৪ জন, জাতীয় পার্টির ৪১ জন, ওয়ার্কাস পার্টির ৭জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ৬জন, তরিকত ফেডারেশনের ২জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ২জন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনএফ) ১ জন এবং ১৬ জন স্বতন্ত্র এমপি রয়েছেন। আর বর্তমানে বাগেরহাট-৩ একটি সংসদীয় আসন শূন্য রয়েছে। ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।