কালিগঞ্জ

ভাড়াশিমলা ইউপি’র ৪নং ওয়ার্ডে হতদরিদ্র কার্ড পেলেন বিত্তবানরা

By daily satkhira

November 16, 2016

মোঃ আরাফাত আলী কালিগঞ্জ: কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে খাদ্য বান্ধব কর্মসুচির আওতায় দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরের চাউল বিতরণের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গরিব বান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গরিব দুঃখী ও অসহায় মানুষের ক্ষুধা নিবরণের জন্য দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরের চাউল বিতরণের ব্যাবস্থা চালু করেন। প্রধানমন্ত্রী হতদরিদ্রদের মাঝে চাউল বিতরণের ব্যাবস্থা করলেও ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে হতদরিদ্ররা রেশন কার্ড না পেয়ে পেয়েছে বিত্তবানরা। সরেজমিনে দেখাযায় ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল খালেক খান সরকারের মহান কর্মসুচি হতদরিদ্রদের মাঝে স্বল্পমূল্যে চাউল বিতরণের রেশন কার্ড প্রদানে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে। তালিকায় যাদের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তাদের অনেকেই হতদরিদ্র নয় বা তারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আদৌ এই চাউল পাওয়ার যোগ্য নয়। তাছাড়া এই কার্ডগুলি বিতরণের সময় ইউপি সদস্য অসৎপন্থা অবলম্বন কেেরছে। যে সকল বিত্তবানদের মধ্য ইউপি সদস্য রেশন কার্ড বিতরণ করেছে তারা হলেন কামদেবপুর গ্রামের জনাব আলীর পুত্র মোঃ নুর ইসলামের একটি শিশু কার্ড আছে তারপরও স্ত্রী বিদেশ থাকে এবং পাকা বাড়ি আছে (কার্ড নংÑ৭০৯)। একই গ্রামের খোরশেদ আলমের পুত্র জাহাঙ্গীর আলমের শিশু কার্ড থাকা সত্বেও রেশন কার্ড পেয়েছে (কার্ড নংÑ৭৩৩)। একই গ্রামের নূর আব্দুল গাজীর পুত্র ফিরোজ হোসেনের পাকা বাড়ি, মাছের আড়ৎ,চাউলের বড় ব্যবসা এবং মাছের ঘের আছে তারপরও রেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে (কার্ড নং-৭৩৫)। একই গ্রামের আরশাদ আলী সরদারের কন্যা আমিরন বেগমের শিশু কার্ড ও পাকা বাড়ি আছে(কার্ড নং-৭৫২)। একই গ্রামের মৃত বাহা আলী গাজীর পুত্র মোঃ আবু মুছা যার পুত্রের প্রতিবন্ধী কার্ড ও পাকা বাড়ি আছে(কার্ড নং-৮২০)। একই গ্রামের মৃত গৌরপদ সাহার পুত্র শংকার সাহার পাকা বাড়ি ও ৩ বিঘা জমি আছে(কার্ড নং-৭২২)। একই গ্রামের লক্ষীপদ সাহার পুত্র সুকুমার সাহার পাকা বাড়ি ও এলাকায় বিভিন্ন ব্যাবসা আছে (কার্ড নং-৭২৪)। একই গ্রামের গোপিনাথ সাহার কন্যা মিনা সাহার পাকা বাড়ি ও ৩ বিঘা জমি আছে (কার্ড নং-৭২৬)। একই গ্রামের মৃত ঈমান জোয়াদ্দারের পুত্র এসহাক জোয়াদ্দারের শিশু কার্ড আছে তারপরও রেশন কার্ড পেয়েছে। খাঁরহাট গ্রামের ভবেন্দ্রনাথ ঘোষের পুত্র উজ্জ¦ল ঘোষ যার মায়ের ভাতাকার্ড আছে এবং চাষের ৩ বিঘা জমি রয়েছে তবুও রেশন কার্ড পেয়েছে (কার্ড নং-৭৯৯)। একই গ্রামের আরশাদ আলীর কন্যা মনোয়ারার পাকা বাড়ি আছে এবং তার মেয়ের শিশু কার্ড আছে। তারপরও রেশন কার্ড পেয়েছে (কার্ড নং-৮০১)। একই গ্রামের বরদা ঘোষের পুত্র মন্টু ঘোষের একটি শিশু কার্ড ও পাকা বাড়ি থাকা সত্বেও রেশন কার্ড পেয়েছে (কার্ড নং-৭৭৮)। একই গ্রামের মনোরঞ্জন ঘোষের পুত্র লংকেশ ঘোষের টাইস বসানো পাকা বাড়ি রয়েছে এবং ৫ বিঘা জমি রয়েছে এরপরও রেশন কার্ড পেয়েছে (কার্ড নং-৭৮৩)। একই গ্রামের মৃত জিতেন্দ্রনাথ ঘোষের পুত্র বাদল চন্দ্র ঘোষ যার ১০ বিঘা জমি থাকা সতে¦ও রেশন কার্ড পেয়েছে (কার্ড নং-৮১৮)। একই গ্রামের কোমল চন্দ্র ঘোষের কন্যা রাধা রানী ঘোষের ৪ বিঘা জমি ও পাকা বাড়ি আছে তবুও সে রেশন কার্ড পেয়েছে (কার্ড নং-৮১৩)। একই গ্রামের বিজয় কৃষ্ণ ঘোষের পুত্র জিতেন্দ্রনাথ ঘোষের ১০ বিঘা জমি আছে যার (কার্ড নং-৮০৭)। একই গ্রামের শেখ ওমর আলীর পুত্র শেখ রফিকুল ইসলামের ৫ বিঘা জমি ও পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও রেশন কার্ড পেয়েছে(কার্ড নং ৮০৫)। একই গ্রামের। কৃষ্ণপদ ঘোষের পুত্র সুজিত কুমার ঘোষের ৪ বিঘা জমি, পাকা বাড়ি ও ডিসকভার একটি মটর সাইকেল আছে (কার্ড নং-৭৯৬)। একই গ্রামের মনোরঞ্জন ঘোষের পুত্র স্বপণ কুমার ঘোষের ১০ বিঘা জমি আছে (কার্ড নং-৭৭২) একই গ্রামের ননী গোপাল ঘোষের পুত্র নারান চন্দ্র ঘোষের ৩ বিঘা জমি ও পাকা বাড়ি আছে (কার্ড নং-৭৭৩)। একই গ্রামের গোপাল চন্দ্র দাশের পুত্র মুরালী মোহন দাসের শিশু আছে (কার্ড নং-৭৭৫)।রেশন কার্ড বিতরণে বিষয়ে ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল খালেক খান এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন আমি কার্ড সঠিক ভাবে বিতরণ করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। আমি আমার ওয়ার্ডে মোট হতদরিদ্র চাউলের কার্ড ১৯৩ টি পেয়েছি কিন্তু দলীয় ৪ নং ওয়ার্ডের সভাপতি কিছু কার্ড দেয়ায় এই সমস্যা হয়েছে। এবিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ এর সভাপতি দেবপ্রসাদ ঘোষ এর কাছে দুর্নীতির বিষয় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন যারা কার্ড পেয়েছে পাকা ঘর থাকলেও তারা দরিদ্র আর দুই এক জন এ মধ্যে বিত্তবান থাকলেও এটা ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিয়েছে এ বিষয় আমি কিছু যানিনা। রেশন কার্ড বিতরণে অনিয়ম এর বিষয় ৮নং ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মাদ বিশ্বাস এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন অনিয়ম হয়েছে এটা আমি শুনেছি তবে এটা দলীয় ভাবে হয়েছে। এটা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এলাকার সচেতন ব্যাক্তিরা একটি দরখাস্ত দিয়েছিল এর প্রেক্ষিতে নির্বাহী অফিসার বসন্তপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন বাসির এর উপর দায়িত্ব দিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় তদন্তের জন্য পাঠিয়ে ছিলেন। রেশন কার্ড অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তের বিষয়ে খাদ্য পদির্শক ও বসন্তপুর খাদ্যগুদাম এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন বাসির এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন তদন্তে যেয়ে দেখি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তাদের অনেকের পাকা বাড়ি আছে,আবার কারও শিশু কার্ড ও ভাতা কার্ড আছে এটা সত্য কিšু‘ যাদের জমি আছে এটা বোঝার তো কোন উপায় নেই। রেশন কার্ড বিতরণের ক্ষেত্রে অনেক অনিয়ম আমার চোখে ধরা পড়েছে, তদন্ত শেষ হয়েছে আমার তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার  কাছে পাঠিয়ে দিব এখন ব্যবস্থা যেটা নেওয়ার নির্বাহী অফিসার নিবেন।