সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় আমের আলাদা বাজার স্থাপনের দাবি ব্যবসায়ীদের

By daily satkhira

May 02, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরায় আমের আলাদা বাজার না থাকায় কাঁচামালের আড়ৎদারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে আম ব্যবসায়ী। নানা কৌমলে সুলতানপুর বড় বাজারের এক শ্রেণির কাঁচামালের আড়ৎদাররা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আম চাষী ও আম বাগান ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই বলে অভিযোগ করেছেন আম ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আম ব্যবসায়ীরা জানান, উৎপাদনের দিক থেকে বৃহত্তম আমের বাজার রাজশাহী জেলা। সে জেলার জন্য চাপাইনবাবগঞ্জ, রহমপুর, বানেশ্বর, কানসাট, বাঘাসহ বিভিন্ন স্থানে আমাদের নির্দিষ্ট বাজার রয়েছে। অথচ রাজশাহীর পরে আম উদপাদনে সাতক্ষীরা ২য় বৃহত্তম জেলা হওয়া সত্ত্বেও এখানে আমের জন্য নির্দিষ্ট কোন বাজার নেই। জানাগেছে, সাতক্ষীরায় আমের মৌসুমে গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, ন্যাংড়া, বোম্বাই, আমরুপালীসহ বিভিন্ন প্রজাতির আম উদপাদিত হয়। তার মধ্যে গোবিন্দভোগ আম মৌষুমের আগে পাকে বলে এর কদর দেশ জুড়ে। আম ক্রয়ের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থান হতে আম ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরায় আসেন। এখানে আমের আলাদা কোন বাজার না থাকায় ব্যবসায়ী কাঁচামালের আড়ৎদারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে। ভরা মৌসুমে সাতক্ষীরা বাজারে প্রতিদিন ৬-৭ হাজার মন আম বিক্রি হয়। কিন্তু এই আম বিক্রির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে কাঁচামালের আড়ৎদাররা হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা। প্রতি বাজরায় আমের জওন থাকে ৯০-১০০ কেজি এবং সাধারণ বিক্রিয় হয় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। এর শতকরা ১০ টাকা হারে আড়ৎদারী কাঁটে। সে হিসেবে ৫ থেকে ৬শ টাকা আড়ৎদারী নেয় বিক্রেতার কাছ থেকে। আর ক্রেতার কাছ থেকে শতকরা ৫টাকা হারে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আড়ৎদারী নেয়। এছাড়াও উক্ত আমগুলো প্রসেসিং করতে বাজরা প্রতি ২ থেকে আড়াইশ টাকা খরচ হয়। একারণে আম ব্যবসায়ীদের বাজরা প্রতি খরচ হয় প্রায় ১ হাজার টাকা। আরেকটি বিষয় হচ্ছে আম খরিদ করার পরে আমগুলো ক্যারেট করার জন্য বাজারের বাহিরে যে কোন এক জায়ঘা ভাড়া করে নিয়ে আমগুলো প্যাকিং করতে হয়। এতে করে আরো বাড়তি টাকা খরচ হয়। যে কারণে আম ব্যবসায়ীরা এখন সাতক্ষীরা আসতে চাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বহিরাগত একজন আম ব্যবসায়ী জানান, সাতক্ষীরা থেকে আম কিনে আমরা খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছি না। তাই ভাবছি যশোর জেলার বাগআচড়া বেলতলা বৃহত্তম আমের বাজার। ওখানে আড়ৎদারী মাত্র শতকরা ৩ টাকা। আর অন্য কোন খরচই নেই। সেহেতু ওই বাজারই আমাদের জন্য ভালো। তা আমরা ওখান থেকে আম খরিদ করবো। তাছাড়া সাতক্ষীরায় আমের বাজার বসে তরকারীর আড়তে বা পৌরসভার রাস্তার উপরে, এতে করে যানজটের কারণে পথচারীরা বা তরকারীর আড়তে বা পৌরসভার রাস্তার উপরে, এতে করে যানযটের কারণে পথচারীরা বা তরকারী ক্রেতাদের দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। আম ব্যবসায়ী ও চাষীদের আলাদা আমের বাজার স্থাপনের দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে। অথচ সাতক্ষীরা পৌরসভা ইচ্ছা করলে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক, রাজারবাগান, গভঃ কলেজ মাঠ, হাইস্কুল মাঠ বা স্টেডিয়ামে মাঠে যদি কে থেকে দেড় মাসের জন্য আমের বাজারটি স্থানান্তর করে তাহলে আম চাষী ও আম বাগান ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে। এ সমস্যার সমাধানের জন্য সদর এমপি, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী আম চাষী ও আম বাগান ব্যবসায়ী মহল। এ বিষয়ে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীর ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন দিলে তিনি রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।