নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুলের গ্রেফতার ও বিদ্যালয়ের নবগঠিত ম্যানেজিং কমিটি বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে বিদ্যালয়ের অভিভাবকবৃন্দ ও ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের নাগরিক সমাজের আয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুটুক্তিকারী, ২টি নাশকতা মামলার আসামী, সহকারী শিক্ষকদের নির্যাতনকারী, অনিয়ম-দূর্ণীতি ও স্বজনপ্রীতিকারী, ডি.বি.ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মুকুলের গ্রেফতার ও ডি.বি.ইউনাইটেড হাইস্কুলে গোপনীয়ভাবে নব গঠিত ম্যানেজিং কমিটি বাতিলের দাবীতে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন নাগরিক সমাজের আহবায়ক ও ব্রহ্মরাজপুর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুস ছালামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিলিপ কুমার মল্লিক, ধুলিহর ইউনিয়ন আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দীন, ৬নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, ব্রহ্মরাজপুর ইউপি মেম্বার মোঃ রেজাউল করিম মিঠু ও এন,বি,বি,কে আল-মদিনা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি শেখ আব্দুল আহাদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ৬নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি হুমায়ন কবির, ৭নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম, ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন আহবায়ক মোঃ শাহাদাত হোসেন রাজ, মোঃ আব্দুর রহিম প্রমূখ। এছাড়া বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ আব্দুস সেলিম, নুরুল ইসলাম বাবু, রবিউল ইসলাম, আব্দুল গফ্ফার শেখ, মোঃ শামসুর রহমান, মোঃ আব্দুল গফ্ফার কারিকর, টুটুল হোসেন প্রমূখ। মানববন্ধনে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদানের পর হতে একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে যাচ্ছে। তাঁর একক সিদ্ধান্তে চলার কারনে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক তার হাতে নির্যাতন ও লাঞ্চিতের শিকার হয়েছে। নির্যাতিত ও লাঞ্চিতদের মধ্যে রয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান, গণিতের শিক্ষক নিমাই চন্দ্র মন্ডল, শরীর চর্চার শিক্ষক আবুল হাসান ও বাংলার শিক্ষক রমেশ চন্দ্র সরকার। শরীর চর্চার শিক্ষক আবুল হাসানকে একবার এমন শারিরীক নির্যাতন করে যে, তার কানের পর্দা ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরন হয়। এ নিয়েও ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ পর্যন্ত করে। বেশ কিছু দিন আগে শিক্ষক রমেশ চন্দ্র সরকারের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সেখানে মুকুল মাষ্টার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে কুটুক্তি করে বলেও বক্তারা জানান। শুধু তাই নয়, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসলে এই মুকুল মাষ্টার তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী সিদ্দীকির সাথে দূর্ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অফিস কক্ষ থেকে জোরপূর্বক নামাতে বাধ্য করে। কয়েকজন অভিভাবক মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে তাদের বক্তব্যে বলেন, ডিবি স্কুল মুকুল মাষ্টারের নির্দেশে চলে। কাউকে পরোয়া না করে তার একক হঠকারী সিদ্ধান্তে বিদ্যালয়ে যা খুশি তাই করে যাচ্ছে। হেড মাস্টার হিসাবে যোগ দিয়ে তার আমলে কোন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ম্যানেজিং কমিটি গঠন হয়নি। নিজের স্বার্থ হাসিল করতে সব সময় গোপনীয়ভাবে তার চাচা সদর থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামকে বানায় আজীবন সভাপতি। আর সদস্য বানায় তার একান্ত পকেটের লোক। নব গঠিত ম্যানেজিং কমিটিতেও একই চেহারা বিদ্যমান। সম্পূর্ন গোপনীয়ভাবে এলাকার কোন মানুষকে না জানিয়ে কাগজপত্র ঠিক রেখে এই ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা নিয়ে মানুষ আজ মুখ খুলতে শুরু করেছে। মুকুল মাষ্টার ও তার চাচা শহিদুলের হাত থেকে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠকে রক্ষা করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, মুকুল মাষ্টার একজন বিএনপি নেতা। সে বর্তমানে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সেক্রেটারী। তার নামে ২টি নাশকতার মামলা রয়েছে। যার সাতক্ষীরা থানার মামলা নং-০৪, তাং ০৩/০১/২০১৪ ইং। অপরটি হলো সাতক্ষীরা থানার মামলা নং-৪৫, তাং-২৮/১২/২০১৭ ইং। মুকুল মাষ্টার একটি মামলায় জামিনে থাকলেও অপর মামলায় জামিন না নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেও বলে মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন। সবশেষে মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে বিএনপি নেতা মুকুল মাষ্টারকে গ্রেফতার ও ডি.বি.ইউনাইটেড হাইস্কুলের নব গঠিত ম্যানেজিং কমিটি বাতিল সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান।