আসাদুজ্জামান: সাতক্ষীরা দেবহাটা উপজেলার গাঁ ঘেষে বয়ে যাওয়া ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত নদী ইছামতির কয়েকটি স্থানে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমের আগেই বেঁড়ীবাধে ভাঙন দেখা দেয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী। সহায় সম্পদ রক্ষায় তাদের খাওয়া-ঘুম প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তবে, পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রামবাসীর আতংক আরও বেড়ে চলেছে। স্থানীয়রা জানান, অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষ, ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীপাড় থেকে বালু উত্তোলন ও নদীতে ঠেলা জাল ফেলার কারণে দেবহাটা উপজেলার চরকোমরপুর, সুশীলগাতী এলাকার বিজিবি পোষ্টের সামনে, ভাতশালা, টাউনশ্রীপুর ও নাংলাসহ কয়েকটি স্থানের বেঁড়ীবাধে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত বছর অল্প কিছু জায়গায় বেঁড়িবাধ সংস্কারের কাজ করা হয়েছিল এ বছর সেসব স্থানসহ নতুন নতুন স্থানে আবারো ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এর ফলে বড় কোন জোয়ার বা বৃষ্টি হলেই বেড়ীবাধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। আর বির্স্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হলে নষ্ট হবে দেশের কোটি টাকার সম্পদ, অসংখ্যা প্রানহানী ঘটারও সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয়রা আরো জানান, কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী ইছামতি নদীর ভাতশালা থেকে খানজিয়া পর্যন্ত ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করছে। আর এই বালু উত্তোলনের কারনে বেঁড়িবাধে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হচ্ছে। পাউবো মাঝে মধ্যে কিচছুটা সং¯কার করলেও সেটা নামমাত্র। প্রকাশ্যে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ও নদীর মাটি কেটে নিলেও প্রশাসন রয়েছেন নীরব। তারা আরো জানান, চিংড়ি চাষীরা খেয়াল খুশী মতো মূল বেড়িবাধের গা ঘেষে ছোট বাঁধ দিয়ে মুল বেড়িবাঁধ নষ্ট করছে। নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আঃলীগের সভাপতি লাভলু বিশ^াস জানান, নাংলা এলাকার বেড়ীবাধটি অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন হওয়ায় তারা ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। ভাতশালা গ্রামের ফারুক মাহবুবুর রহমান জানান, সরকারের টাকা নষ্ট হচ্ছে অথচ পরিকল্পিতভাবে বেঁড়িবাধ সংস্কার হচ্ছেনা। দেবহাটা উপজেলা আঃলীগের সভাপতি ও নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মুজিবর রহমান জানান, নাংলা এলাকার বেঁড়িবাধ সংষ্কারের বিষয়ে তিনি সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ রুহুল হক এমপিকে নিয়ে সরেজমিনে দেখিয়েছেন এবং সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছেন। কিন্তু তারা এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। ভাঙ্গন কবলিত স্থানগুলো দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল আসাদ পরিদর্শন করে জানান, তিনি ইতিমধ্যে বেঁড়িবাধ সংষ্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন।