তালা

কপোতাক্ষ পাড়ের পানিবন্দি কোমলমতি শিশুরা এখনও হাঁটু-কাদা মাড়িয়ে স্কুলে যায়

By daily satkhira

November 17, 2016

মিজানুর রহমান,তালা : কপোতাক্ষ পাড়ের কোমলমতি শিশুদের এখনও হাঁটু-কাঁদা মাড়িয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয়। অনেক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে এখনও পানি রয়েছে। তাই ক্লাস করতে  হচ্ছে অন্যের বাড়ি অথবা রাস্তার উপর। এরই মধ্যে বার্ষিক এবং সমাপনী পরীক্ষা আসন্ন। তাই ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার সফলতা নিয়ে  চিন্তিত অভিভাবকরা। এমনই অবস্থার মধ্য দিয়ে গত ৪ মাস ধরে চলছে জলাবদ্ধ এলাকার শিক্ষা কার্যক্রম। সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা অবকাঠামগত উন্নয়ন ঘটলেও কপোতাক্ষ পাড়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অন্যান্য স্থানের তুলনায় ৪/৫ মাস পিছিয়ে পড়ছে। সেই সাথে পিছিয়ে পড়ছে শিশুদের আগামী দিনের স্বপ্ন। সরেজমিন তালার গংঙ্গারামপুর, গোনালী, হরিচন্দ্রকাটি, কানাইদিয়া, খরাইল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বসত ভিটার পাশা-পাশি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে আছে। গংঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের মধ্যে পানি, তাই পাশ্ববর্তী একটি ধানের চাতলে চলছে পাঠদান। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা প্রতিভা রানী ঘোষ জানান, স্কুল মাঠে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে ৯৫ জন ছাত্র/ছাত্রীর বিপরীতে ৩ জন শিক্ষিকা রয়েছেন, তবে বছরের পর বছর জলাবদ্ধ থাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এলাকার সচেতন অভিভাবকরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ছেলে -মেয়েদের অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে বলে জানান এক শিক্ষিকা।  ১৪৮ নং গোনালী সরকারি বিদ্যালয়টি পানি বেষ্ঠিত একটি দ্বীপের মত দাড়িয়ে আছে। ৫ জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১১৮ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে পার্শ্ববর্তী  রজব আলী গাজীর বাড়িতে চলছে পাঠদান। এমন অবস্থায় প্রতি বছরের ৫/৬ মাস যাবৎ চলে পাঠদান কার্যক্রম। প্রধান শিক্ষিকা লতিফা খানম জানালেন সুপেয় পানি সহ স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে মারাত্বক সংকট চলে আসছে এ ক’মাস। তালা টেকনিক্যাল কলেজ কক্ষে এখনও পানি, তালা উপজেলা সদরের একটি ভাড়া ভবনে চলছে ক্লাস। টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, এখনও বেতন হয়নি শিক্ষকদের,তারপরেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া এগিয়ে নিতে অনেক টাকা ব্যায়ে ভবন ভাড়া করে ক্লাস চালাতে বাধ্য হয়েছি। হরিচন্দ্রকাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস চলছে পানির মধ্যে মারাত্বক ঝুকিপূর্ণ একটি ভবনে। লাড়িপাড়া, খরাইল সহ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এখনও পানি, আসা যাওয়ার পথে হাটু-কাদা। তালা শহীদ কামেল মডেল হাইস্কুল সহ ভবানীপুর, কেসমতঘোনা, মাঝিয়াড়া, খানপুর, কাজীডাংগা, ইসলামকাটি এলাকার আরও কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশ পানি বেষ্টিত থাকায় এখনও শিক্ষার সুষ্ঠ  পরিবেশ ফিরে আসেনি। ফলে জলাবদ্ধতার কবলে মারাত্বক হুমকির মুখে পড়েছে এলাকায় শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষা অফিসের হিসাব মতে এবছর কপোতাক্ষের উপচে পড়া পানিতে তালা উপজেলার ৫০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এবং ৩ টি কলেজ পানিবন্দি হওয়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তালা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ওহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হওয়ায় শিশুদের লেখাপড়ায় বিঘœ  ঘটেছে, তবে আমরা বিপদকালীন সময়ে অন্যত্র ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।