হাসিন জাহানকে প্রতিদিন নতুন নতুন হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শামির বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তার সাক্ষীদের সঙ্গে দেখা করতে তিনি রয়েছেন উত্তরপ্রদেশে। এদিন হাসিনের দাবি, শামির আত্মীয়দের থেকেও পরোক্ষ হুমকি আসছে। শামির মামা মুবির এদিন হাসিনকে জানান, শামি বলেছে উত্তরপ্রদেশে না থেকে কলকাতায় ফিরে যাও। তা না হলে আমরোহায় হাসিনের শ্বশুরবাড়িতে যেমন তালা পড়ে গেছে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে কলকাতার বাড়িতেও তালা পড়ে যাবে।
হাসিন আরও বলেন পুলিশ-প্রশাসন এবং হাসিবের (শামির দাদা) গুন্ডারা আমাকে প্রতি মুহূর্তে চাপের মধ্যে রেখে দিয়েছে।
কলকাতা পুলিশের তরফে দেয়া নিরপত্তারক্ষী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় একাই হাসিন উত্তরপ্রদেশ পৌঁছেন। পরিবর্ত হিসেবে যিনি হাসিনের সঙ্গে যোগ দিতে উত্তরপ্রদেশ যাচ্ছিলেন, রাস্তায় গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ায় তিনি এলাহাবাদেই আটকে রয়েছেন। ফলে হাসিনের গাড়ির চালক ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী এখনও উত্তরপ্রদেশ পৌঁছতে পারেননি।
উত্তরপ্রদেশে থাকাকালীন প্রতিটি মুহূর্তেই তাকে অসহযোগিতার শিকার হতে হচ্ছে বলে এদিনও দাবি করেন হাসিন। আমরোহা জেলা-শাসকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও তাকে চূড়ান্ত অসহযোগিতার মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানান।
জেলাশাসক তার সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করেন বলে জানিয়েছেন হাসিন। এদিকে এখনও শামির বাড়িতে তালা। এ পরিস্থিতিতে কেন বারবার উত্তরপ্রদেশের শামির বাড়িতে যেতে চাইছেন এমন প্রশ্নে হাসিনের জবাব, এখনও ওটা আমার শ্বশুরবাড়ি। আমি শামিকে ডিভোর্স দেব না। আমার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ওই বাড়িতে রয়েছে। যেগুলো আমার মামলার জন্য ভীষণ জরুরি।
‘সেই কাগজগুলো নেওয়ার জন্যই শ্বশুরবাড়িতে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এখানে এমনভাবে তালা দেয়া এবং বাইরে পুলিশ প্রহরা, ফলে আমার একার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) প্রবীণকুমার ত্রিপাঠীর নির্দেশে দ্বিতীয় দফার গোয়েন্দাদের একটি দল রোববারই পৌঁছেছে শামির গ্রামে। তাদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে তা নিয়ে খোলাসা না করলেও হাসিন বলেন, এ বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে পারব না। তবে ওদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা হয়েছে।
হাসিন জানান, আমি আরও কয়েকটা দিন এখানে থাকতে চাই। এখানে এখনও অনেক মানুষ আমাকে ভালোবাসেন। দেখছি গ্রামের বহু মানুষ শামির পরিবারের প্রতি বিক্ষুব্ধ। ওরা আমার পাশে আছে। কিন্তু এমনভাবে তাদের আমার থেকে দূরে রাখা হয়েছে, যেটা অবাক করা মতো।
হাসিনের জেদ, আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। জানি, এখানে যতদিন থাকব ততদিন প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে। প্রাণ সংশয় রয়েছে। আমি এ মুহূর্তে নিরাপত্তাহীন।
তবে চূড়ান্ত অসহযোগিতার মধ্যেও হাসিন কৃতজ্ঞ শামির এক তুতো ভাইয়ের কাছে। সে কথা স্বীকার করে বলেন, আমি কৃতজ্ঞ শামির এক খুড়তুতো দাদার কাছে। ভয়ের কারণে কেউ আমাকে এখানে আশ্রয় দেয়নি। উনি আমাকে পাশের গ্রামে নিয়ে এসেছেন। নিশ্চয়তা দিয়েছেন, আমার এবং বেবোর কিছু হবে না। এখান থেকেই আমি লড়াই চালিয়ে যেতে চাই। নিশ্চয়ই কলকাতা ফিরব। তবে সেটা কবে জানি না।