আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫২, আহত ১২ হাজার

By Daily Satkhira

May 15, 2018

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের প্রতিবাদে ইসরায়েলের সীমান্তে বিক্ষোভ ডেকেছিল ফিলিস্তিনিরা। লাখো মানুষের সেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের কারণ দেখিয়ে ইসরায়েলি বাহিনি গুলি ও গোলা-বারুদের আগুন ছুড়েছে। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫২ জন।

টাইমস অফ ইসরায়েল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানিয়েছে এখন পর্যন্ত ৫২ জন নিহত এবং ১২ হাজার জন আহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের দিকে আগুন ছুড়ে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ আনা হলেও তারা বলছে, ‘বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে ১০ হাজার বিক্ষোভকারীকে নিয়ন্ত্রণে ঠিক যতোটুকু আগুন ছুড়ে নিয়ন্ত্রণের আইনী বিধিমালা রয়েছে, তারা সে অনুযায়ীই আগুন ছুড়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের ঘোষণা দেওয়ার পর গত ছয় সপ্তাহ ধরেই মে মাসের ১৪ তারিখ এবং জেরুজালেম সারা বিশ্বের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। যা নিয়ে রয়েছে সমালোচনা এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী বলে বিবেচনা করে ইসরায়েল। অপরদিকে ফিলিস্তিনিরা তাঁদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে পূর্ব জেরুজালেম দাবি করে আসছে। তাঁরা ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছে।

গত বছর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষ থাকার কয়েক দশক ধরে অনুসৃত নীতি থেকে সরে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ।

ফ্রান্স, তুরস্ক, সৌদি আরবসহ অনেক মিত্র দেশের আহ্বান উপেক্ষা করেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরের ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরে ঘোর আপত্তি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জেরুজালেমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস উদ্বোধন তাঁদের জন্য উদযাপনের একটি বিষয়।

অপরদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস একে বর্ণনা করেছেন মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রচেষ্টার ওপর ‘শতকের সবচেয়ে বড় আঘাত’ হিসেবে।

মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের কাছে পবিত্র নগরী জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে চায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন। ইসরায়েল বরাবরই জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী বলে দাবি করে আসছে। অন্যদিকে ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলিদের দখলে যাওয়া পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করতে চান ফিলিস্তিনি নেতারা।

কয়েক দশক ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে জেরুজালেমের বিষয়টি। পবিত্র ওই নগরীর ওপর ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়। ১৯৯৩ সালের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চুক্তি অনুযায়ী জেরুজালেমের পরিচয় কী হবে তা শান্তি আলোচনায় ঠিক হওয়ার কথা।