ফিচার

কিছু টুকরো ছবি- দিলরুবা

By Daily Satkhira

May 19, 2018

দিলরুবা কিছু টুকরো ছবি

একজন তুখোড় রাজনীতিবিদ বইমেলা থেকে চে গুয়েভারার অগ্নিময় বিপ্লবের সাথে কিনলেন এক ভলিউম প্রেমের কবিতা মধ্যরাত পার করে দীর্ঘ বাইশ বছর পর আবার হাতে তুলে নিলেন প্রথম যৌবনে পড়া প্রিয় কবিতাখানি পড়তে পড়তে বুঝিবা ফিরে গেলেন সেই সোনালি দিনে যখন স্বপ্নের দরজার চাবি গচ্ছিত রেখেছিল কেউ একান্ত নির্ভরতায় শুধু তারই কাছে।

একজন গৃহবধূ তার সামান্য সঞ্চয়ের সবটুকু নিয়ে এসেছে চিত্র প্রদর্শনী থেকে প্রিয় একটি ছবি কিনবে বলে তার একদা সহপাঠী যে কিনা আজ নামকরা চিত্রকর তারই ছবির প্রদর্শনী চলছে চারুকলায় কদমের সোনালি কেশরে ভিজে যাচ্ছে নিত্যরত মেয়েটির সর্বাঙ্গ গাছের আড়াল থেকে এক কিশোর মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছে তা ভালো করে খেয়াল করলে বোঝা যাবে পুস্প¯œাতা মেয়েটির আদলের সাথে অনেকটাই মিল এলোখোঁপা বাঁধা বধুটির।

পাগলা ঘন্টি বলছে, জ্বলে উঠেছে চোখ অন্ধ করা আলো চারপাশে একটাই রবÑ খোঁজ খোঁজ খোঁজ আকাশ ছোঁয়া পাথুরে প্রাচীর টপকে কোথায় গেল ওরা অর্ধভুক্ত কালো মানুষগুলো কোথায় পেল, এত সাহস অরণ্যের অধিকার ছিনিয়ে আনতে মৃত্যু সে তো পায়ের ভৃত্য পেছনে সাক্ষাৎ যম সামনে চিরচেনা গহীন প্রিয় অরণ্য ডাইনি জোছনায় হাঁসছে বনভূমি, বাতাসে মাদলের রিমঝিম শব্দ ওরা থমকে দাঁড়ালো ক্ষণিক, তারপর উধাও মাতৃসম বনাভ্যন্তরে প্রকৃতি তোমাকে উপেক্ষা করে এমন ক্ষমতা কারো নেই।

ভোরের কুয়াশা ভেদ করে দুরন্ত গতিতে ছুটছে এক দ্বিচক্রযান কয়েকদিন পর ভর্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী খুদে সৈনিকটি পরম নিশ্চিন্তে বাবার কোমর আকড়ে ঘুমচোখে বসে। শিশুর কোমল মাথা ঘিরে হেলমেটের শক্ত আবরণ শিরস্ত্রাণ বিহীন পিতার কপালে দুশ্চিন্তার বঙ্কিম রেখা অপত্য স্নেহের নিটোল একটি ছবি।

এত যে গৌরচন্দ্রিকার অবতারণা কেন জানো ? ‘ভালোবাসি’ সহজ কথাটি সহজে বলতে পারিনা তাই।

 

জানালা পারের ঝাপসা জীবন

তামাটে আকাশে একা ঝুলছে পুরানো ঘোলা সূর্যটা কার্নিশে কামাতুর কবুতরের বাকবাকুম লাটাই ছিড়ে ভোকাট্টা পালিয়ে যাওয়া ঘুড়ির পানে অবাক চোখে তাকিয়ে দুরন্ত কিশোর। তেমাথার মোড়ের নুলো ভিখারিটা এইমাত্র হাত রাখল কালো কাঁচে ঢাকা গাড়ির হাতলে, পাশের বাড়ির মেয়েটি অফিস যাওয়ার নাম করে রোজকার মতো চলে গেল সেজেগুজে বৃদ্ধা মায়ের দেখভালের গুরুভার তার কাঁধে চাপিয়ে বাড়ির সুপাত্রটি, সংসার পেতেছে আরব সাগরের তীরে। এ শহরের গুমোট গরম তার স্লিভলেস ব্লাউজ পরা সুন্দরী স্ত্রীর সহ্য হয় না। অতএব মেয়েটিকেই পালাবদল করে অভিনয় করতে হয় নানান মানুষের স্ত্রীর ভূমিকায়।

হায়রে সাধের মানব জীবন ! নিত্যকার যাপিত জীবনের চলচ্ছবি হাতুড়ি পেটায় মাথায় হাত নিসপিসিয়ে ওঠে নিজের কণ্ঠ রোধ করতেÑ পারি না। অক্ষমতার জ্বালায় পুড়ে অঙ্গার হই আরো একবার তবু খাঁটি হয় না সোনা।