শুধু ভোজনরসিকদের কাছেই নয়, বেশির ভাগ মানুষের কাছেই দই পছন্দের খাবার। দই সুস্বাদু মুখরোচক মিষ্টি হিসেবে খাওয়া হলেও এটি একটি পুষ্টিমানসমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবারও। এখন গরমকাল, এবার গরমকালে রোজা। তাই রোজা রাখার পর খাদ্যতালিকায় দুগ্ধজাত এ খাবারটি নিয়মিত রাখলে পুষ্টিগতভাবে ঠিক থাকবে শরীর।
রোজার সময় শরীরে প্রচুর পানির চাহিদা থাকে। আর দইয়ে রয়েছে জলীয় ও পুষ্টিগত উপাদান, যা শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। অন্যান্য উপাদানের পাশাপাশি, দইয়ে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন। বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ভিটামিন ‘বি৫’, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়োডিন ও রিবোফ্লাভিন।
ইফতারে দই দিয়ে বেশ কয়েকরকম শরবত বানাতে পারেন। তাছাড়া চিড়া-দই খেতে পারেন শরীরে পরিমিত পুষ্টির যোগান পেতে।
আসুন জেনে নেয়া যাক খাবারটির আরও কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-
* ওজন কমাতে সাহায্য করে
প্রতিদিন দই খাওয়া শুরু করলে হজমের ক্ষমতা বাড়তে থাকে। নিয়মিত দই খেলে শরীরে মেদ জমার আশঙ্কা যায় কমে। তাই অতিরিক্তি ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে নিয়মিত দু-কাপ করে দই খেতে পারেন।
* ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে দইয়ে উপস্থিত ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং স্ট্রেপটোকক্কাস থ্রেমোফিলাস নামক দুটি ব্যাকটেরিয়া শরীরে ক্যান্সার সেলের জন্ম প্রতিরোধ দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
* হজম শক্তি বৃদ্ধি
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে দইয়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা পাকস্থলিতে হজমে সহায়ক ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এ কারণেই বদ-হজম এবং গ্যাসের সমস্যা কমাতে দই খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
* মানসিক চাপ মুক্ত রাখে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে দই খাওয়ার পর আমাদের মস্তিষ্কের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন হয় যা মানসিক চাপ এবং অ্যাংজাইটি কমতে শুরু করে। তাই মানসিক চাপ কমাতে দইয়ের কোনো বিকল্প নেই।
* হার্টের ভালো রাখে
রক্তে খারাপ কোলেস্টরল কিংবা এলডিএলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে দই। তাই নিয়মিত দই খেলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
দইয়ে উপস্থিত উপকারি ব্যাকটেরিয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে যে সংক্রমণ থেকে ভাইরাল ফিবার, কোনো কিছুই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
* দুধের বিকল্প
এমন অনেকই আছেন যারা একেবারে দুধ খেতে পারেন না। কারও গন্ধ লাগে, তো কারও বমি আসে। এই ধরনের সমস্যাকে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স বলা হয়। দুধ থেকে দই হওয়ার সময় ল্যাকটোজ, ল্যাকটিক অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয়ে যায়। ফলে দই খেলে না গা গোলায়, না বমি পায়।
* ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
দইয়ে পরিমাণ মতো বেসন এবং অল্প করে লেবুর রস মিশিয়ে যদি মুখে লাগালে ত্বক নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই। দইয়ে থাকা জিঙ্ক, ভিটামিন ই এবং ফসফরাস ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
* হাড়ের জন্য খুব উপকারি
দুধের মতো দইয়েও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম। এই দুটি উপাদান দাঁত এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।