ফিচার

মুক্তামণিকে দেখতে যেতে পারলাম না, খুব কষ্ট লেগেছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

By Daily Satkhira

May 29, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক: চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে গত বুধবার না ফেরার দেশে চলে গেছে রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণি। তাকে দেখতে হাসপাতালে যেতে না পারার মনঃকষ্ট তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

সোমবার (২৮ মে) পেশাজীবীদের সম্মানে গণভবনে ইফতার মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের জাতীয় সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনকে দেখামাত্রই মুক্তামণির কথা উল্লেখ করেন। বলেন, মেয়েটা চলে গেল, দেখতে যেতে পারলাম না, আমার খুব কষ্ট লেগেছে।

ডা. সেন গতরাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ছোট্ট এই শিশুটির মৃত্যুতে হৃদয়বান প্রধানমন্ত্রী মনে কষ্ট পেয়েছেন। এর আগে মুক্তামণির মৃত্যুর পরও তিনি শোকবার্তা জানিয়েছিলেন।

ঢামেক বান ইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকাকালে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় শিশু মুক্তামণির অসুস্থতার খবর প্রকাশের পর ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিষয়টি জানালে মুক্তামণিরিচিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে কর্মরত তৎকালীন পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিনকে মুক্তামণির চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্ব ও খোঁজখবর রাখার নির্দেশ দেন। তিনি নানা সময় মুক্তামণির শরীরের কী অবস্থা তাও জানতে চাইতেন। তবে কথা থাকলেও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় তখন মুক্তামণিকে হাসপাতালে দেখতে যেতে পারেননি।

প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার পর তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তামণির হাত দেখে আঁতকে ওঠেন। একই সঙ্গে হাত অপারেশনের জন্য অপারগতা প্রকাশ করেন। এর পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা দেশেই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কয়েক দফা অপারেশনও করেন। তবে হাতের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেননি।

২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় মুক্তামণিকে। দীর্ঘ ৬ মাস চিকিৎসাসেবার পর এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে যায় মুক্তামণি। তবে পরে মুক্তামণি ঢাকায় আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। একই সঙ্গে মুক্তামণির অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় ঢাকায় আসতে নিরুৎসাহী হয়ে পড়ে তার পরিবারও।

গত ২৩ মে সকাল ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের নিজ বাড়িতেই মৃত্যু হয় ১২ বছর বয়সী মুক্তামণির।