ন্যাশনাল ডেস্ক: বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে পরিচিত ১০জন লেখক, কবি এবং শিল্পী চলমান মাদক বিরোধী অভিযান সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে অবিলম্বে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তারা বলেছেন, এই অভিযানে প্রতিদিন অনেক মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছেন। যা পুলিশ বন্দুক যুদ্ধে নিহত বলে বর্ণনা করছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং সমাজ ব্যবস্থায় এমন মৃত্যু কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
যে দশজন মিলে এই বিবৃতিটি দিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন আনিসুজ্জামান, হাসান আজিজুল হক, রামেন্দু মজুমদার, নির্মলেন্দু গুণ, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, আতাউর রহমান, গোলাম কুদ্দুস এবং হাসান আরিফ।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, সারাদেশে যে মাদক বিরোধী অভিযান চলছে তার যৌক্তিকতা তারা বুঝতে পারেন। কিন্তু এই অভিযানে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন বলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যাবস্থায় এমন মৃত্যু কখনই গ্রহনযোগ্য নয়। সংবিধানে প্রদত্ত জীবনের অধিকার এ ভাবে কেড়ে নেয়া যায়না।
টেকনাফে পৌর কমিশনার একরাম হত্যার ঘটনা এবং প্রকাশিত ফোনালাপের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, “কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে অকল্পনীয়। এরকম একটি ঘটনাই সমগ্র অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ ও জনগনকে আতঙ্কিত করতে যথেষ্ট।”
বিবৃতিদাতাদের একজন নাট্যাভিনেতা মামুনুর রশিদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, প্রথম থেকেই এই অভিযান সম্পর্কে তাদের মনে উদ্বেগ ছিল।
“কিন্তু টেকনাফের নিহত পৌর কমিশনার একরামুল হকের স্ত্রী এবং কন্যার অডিও প্রকাশ হওয়ার পর সেটাই সবাইকে খুব নাড়া দিয়েছে। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এভাবে ধারাবাহিকভাবে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড চলতে দেয়া যায় না।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে এখন মাদক ব্যবসা সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে, সেখানে ১৪৪ জনকে হত্যা করে এই সমস্যার সমাধান হবে না। এর জন্য রাজনৈতিক পদক্ষেপ দরকার। খুঁজে বের করা দরকার কারা এর সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, মাদক বিরোধী অভিযান অবশ্যই চলা দরকার। কিন্তু অভিযান মানেই তো হত্যা নয়। অভিযান আমরা বন্ধ করতে বলবো না। কিন্তু অভিযানের প্রকৃতি কী হবে, সেটা সরকারকে ভাবতে হবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা