আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ১৫ মে থেকে শুরু মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রায় ১৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আটক হয়েছেন ১৩ হাজার। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান ঘোষণার পর এই হত্যাকাণ্ড বেশি হচ্ছে।
জায়েদ রাদ আল হোসেন বলেন, ‘এত মানুষকে হত্যার ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আর সরকার বলছে, নিহতরা কেউই নির্দোষ নয়। বিশাল এই অভিযানে ভুল হতেই পারে।’ সরকারের এমন বক্তব্য খুবই বিপজ্জনক ও আইনের প্রতি অসম্মান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষ মাদক সেবন বা বিক্রির কারণে মানবাধিকার হারাতে পারে না। নির্দোষদের রক্ষা করে দোষীদের আইনের আওতায় এনেই অপরাধ দমন করতে হবে।’
শত শত আটকের ঘটনায় জায়েদ রাদ আল হোসেন বলেন, ‘এত মানুষকে আটক করলে বোঝাই যাচ্ছে, অনেককে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে আটক করা হয়নি। অনেকেই মানবাধিকারবঞ্চিত হয়েছেন।’
মানবাধিকার হাইকমিশনার বাংলাদেশ সরকারকে ‘বিচারবহির্ভূত’ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন করা না হয়। গত সপ্তাহে জেনেভায় আমাকে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রীর আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তিনি এই ঘটনায় স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানান।
জায়েদ রাদ আল হোসেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের বস্তিতে বসবাসকারীদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়া যারা অসুস্থতার জন্য ওষুধ খান, তাদেরও মাদক সেবক আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোনও সন্দেহ নেই মাদকের এই মাত্রা খুবই বিপজ্জনক। তবে বিচারবহির্ভূত হত্যা, আটক এই সমস্যার সমাধান হতে পারে না। আমি জাতীয় মাদকবিরোধী কমিটিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযয়ী একটি নীতি বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই।’
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার বাংলাদেশের প্রশংসা করা উচিত উল্লেখ করে জায়েদ রাদ হোসেন বলেন, ‘সারাবিশ্বের কাছে তারা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মানবাধিকার বিষয়েও আমি সেই সম্মান অর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি।’